জাতীয় সংসদের মতো সিটি নির্বাচনও সুষ্ঠু চাই : সিইসি
সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনও সুষ্ঠু চাই বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা। মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ের ইটিআই ভবনে ঢাকা উত্তর সিটি মেয়রের শূন্য পদে স্থগিত নির্বাচন, উত্তর ও দক্ষিণ সিটির নবগঠিত ৩৬টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে স্থগিত নির্বাচন এবং উত্তর সিটির ৯ ও ২১ নং সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলরের শূন্য পদে নির্বাচন উপলক্ষে রিটার্নিং অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদের ব্রিফিং অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশ্যে সিইসি বলেন, আমরা চাই ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আপনাদের পরিচালনায় সুষ্ঠু হবে যেমনটি হয়েছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সংসদ নির্বাচনে আপনারা যে পরিশ্রম করেছেন, দক্ষতা দেখিয়েছেন এবং একটি সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচন জাতির জন্য উপহার দিয়েছেন। যে জন্য আপনাদেরকে এবং আপনাদের মাধ্যমে আপনাদের যতো সহকর্মী আছেন বাংলাদেশে বিভিন্ন জায়গায় তাদের প্রতি আন্তরিকতা থাকলো, অভিনন্দন থাকলো।
তিনি বলেন, সচিব সাহেবের স্বাক্ষরে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আচরণবিধিমালা আপনাদের কাছে পৌঁছে যাবে। এখানে ৩৩টি বিধি রয়েছে তার মধ্যে ৩০টি বিধির উপরে আপনাদের দৃষ্টি দিতে হবে, নজর দিতে হবে। সেই বিধিগুলো প্রতিপালন কিভাবে হয়, সেটা যদি দেখতে পারেন তাহলে দায়িত্ব পালন করা অনেক ক্ষেত্রে সহজ হবে।
'এখানে নির্বাচনে কে জয়ী হলো সেটা দেখা আপনাদের বিষয় নয়। আপনাদের বিষয় হলো আচরণবিধি তারা কীভাবে পালন করে সেটা দেখা। যাদেরকে জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন তিনি হবেন নির্বাচিত।' যোগ করেন সিইসি।
সিইসি বলেন, চারজন সহকর্মী (নির্বাচন কমিশনার) কিন্তু একটা কমন কথা বলেছেন। আইনানুগ নির্বাচন করতে হবে। আপনাদের প্রতি যেমন মানুষের আস্থা, ভালোবাসা আছে- সেটা প্রয়োগ করেই এই নির্বাচনের আচরণবিধি কীভাবে প্রতিপালিত হয় তা দেখতে হবে। আপনারা জানেন যখনই ম্যাজিস্ট্রেটরা কোথাও গিয়ে আচরণবিধি মেনে চলার জন্য পরামর্শ দেন- প্রার্থী বা যেই হোক না কেনো সবাই কিন্তু অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে প্রতিপালন করেন।
সিইসি আরো বলেন, সমস্যা হয় কাউন্সিলরদের নিয়ে। তারা এতো বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকেন, আইন-কানুন অবনতির ক্ষেত্রে কোনো কোনো জায়গায় তাদের ভূমিকা থেকে যায়। তবে আপনারা যদি ক্ষিপ্রতা, নিরপেক্ষতা ও বিচারিক মনোভাব নিয়ে তাদের সামনে যান তবে দেখবেন প্রত্যেকে কথা শুনবে।
তিনি বলেন, আমি দেখেছি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়। একজন জুনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে যদি কোনো প্রার্থীকে জরিমানা করেছেন, প্রতিবাদ করেননি। যে দলেরই হোক না কেন জরিমানা দিয়ে ও ভবিষ্যতে এরকম অপরাধ আর করবেন না এরূপ অঙ্গীকার দিয়ে গেছেন।
নূরুল হুদা বলেন, আমার সহকর্মীরা বলেছেন- আইনানুগ দৃষ্টিভঙ্গি ও বিচারিক মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। সেটা আপনাদের মধ্যে আছে একথায় আমার বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। আপনারা যারা এখানে আছেন, তারা এদেশের যোগ্য নাগরিক। আপনাদের হাতে কোনো অনিয়ম হবে না এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। আপনারা কখনো বিশেষ করে নিরপেক্ষতার ক্ষেত্রে আপনাদের আপস হবে না এ ব্যাপারে আমার কোনো সন্দেহ নেই। আপনাদের প্রতি মানুষের যে আস্থা, সম্মান ও ভরসা আছে সেই জায়গাটায় আপনারা কখনোই কম্প্রোমাইজ করবেন না সেটা আমি জানি।
তিনি বলেন, আমি বারবার বলেছি যে- দেশ আপনাদের হাতে ভবিষ্যতে গঠিত হবে। আপনাদের হাতে দেশ সম্পদশালী হবে, উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবে, অগ্রযাত্রার দিকে এগিয়ে যাবে কোনো সন্দেহ নেই। আপনারা ছাড়া আর কে-বা করবে। এই দেশের উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব কে নেবে। এখন যেখানে আছেন যোগ্যতার মাপকাঠিতে আপনারা তার চেয়ে অনেক উপরে যাবেন, আরো বড় বড় দায়িত্ব নেবেন। সুতরাং এখনকার যে দায়িত্ব তা কখনো অবহেলার চোখে দেখবেন না।
এইচএস/এসএইচএস/এমকেএইচ