দায়িত্ব পালনে দল মত দেখা হবে না : প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৯:১৮ পিএম, ১৯ জানুয়ারি ২০১৯

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ভোটের মাধ্যমে বিজয় অর্জন করে যখন প্রধানমন্ত্রী হয়েছি তখন দল মত নির্বিশেষে সবার সেবা করা আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য। যারা ভোট দিয়েছেন এবং যারা ভোট দেননি তাদের সবার জন্যই কাজ করব। সকলের তরে সকলে আমরা মিলেমিশে দেশের জন্য কাজ করব।’

রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শনিবার বিকেলে আওয়ামী লীগের বিজয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গত ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের জনগণ যে রায় দিয়েছে সে রায় দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ, মাদক, সন্ত্রাস ও অগ্নিসংযোগের বিরুদ্ধে রায়।’

তিনি বলেন, ‘বিজয় পাওয়া যত কঠিন তার চেয়ে বেশি কঠিন বিজয়কে ধরে রাখা। বাংলাদেশের জনগণ শান্তি চায়, উন্নয়ন চায়। আমরা এ বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দরিদ্র্যমুক্ত অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে আসব। আধুনিক ডিজিটাল বাংলাদেশ কীভাবে গড়ে তোলা যায় সে চেষ্টা করব। আমরা উন্নত বংলাদেশ গড়ে প্রমাণ করব যে আমরাও পারি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এগিয়ে যাবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭৫ এর আগে বাংলাদেশ যখন উন্নয়নের দিকে ধাবিত হচ্ছিল ঠিক সেই সময় ১৫ আগস্ট ধানমন্ডির ওই বাড়িসহ আরও তিনটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে জঘন্য হত্যাকাণ্ড চালায় উচ্চাভিলাসী একদল সৈনিক। ১০ বছরের শিশু রাসেলকে পর্যন্ত তারা হত্যা করেছে। তারা বলেছিল, বঙ্গবন্ধুর কোনো রক্ত বেঁচে থাকবে না, আমরা বাঁচিয়ে রাখব না।’

এ সময় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন এবং কিছু সময় বাকরুদ্ধ অবস্থায় কাটান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আমি বাংলার মানুষের হাহাকার দেখেছি। তখন বাংলার মানুষের পরনে কাপড় ছিল না, পায়ে জুতা ছিল না, ঘরে খাবারও ছিল না। মানুষ অতিকষ্টে জীবন যাপন করছিল। তখনই আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম আমার বাবা যে স্বপ্ন নিয়ে এ বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলেন সেই স্বপ্ন আমি বাস্তবায়ন করব। এ দেশের মানুষের মুখে আমি হাসি ফোঁটাব। এ দেশের মানুষ যেন গরিব না থাকে, মানুষকে যেন না খেয়ে থাকতে না হয়। সে জন্য আমি কাজ করে যাব। গত ১০ বছর আমি অস্বাভাবিক পরিশ্রম করেছি বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নেয়ার জন্য।’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সফল করার জন্য এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত এ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রী মোহাস্মদ নাসিম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এমপি, মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মোল্লা আবু কাউসার ও যুব মহিলা লীগ সভাপতি নাজমা আক্তার। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।

এর আগে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে অভিনন্দনপত্র পাঠ করেন দলের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে অভিনন্দনপত্র তুলে দেন তিনি।

দুপুর আড়াইটার দিকে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিজয় সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হয়। দুপুর ১২টা থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন মমতাজ বেগম, ফাহমিদা নবী, সালমা ও জলের গান ব্যান্ড।

সমাবেশ শুরুর আগে সকাল থেকেই মাইকে দেশাত্মবোধক, পল্লীগীতি, ভাওয়াইয়া গান বাজানো হয়। মাঝে মধ্যে কবিতাও আবৃতি করা হয়।

এফএইচএস/এনডিএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।