বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের বোরকা পরতে হবে, শিক্ষক হতে হবে নারী : শফী

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:০৬ এএম, ১৪ জানুয়ারি ২০১৯
ফাইল ছবি

মেয়েদের পড়াশোনা নিয়ে নিজের দেয়া বক্তব্যের ব্যাখ্যায় আবারও বিবৃতি দিয়েছেন হেফাজতে ইসলামির আমির ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার পরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফী। বিবৃতিতে এবার তিনি বলেছেন, ‘কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের পড়াতে চাইলে বোরকা পরতে হবে। তাদের শিক্ষকও নারী হবেন।’

রোববার সন্ধ্যায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

কারও বক্তব্য বিকৃত না করার অনুরোধ জানিয়ে বিবৃতিতে আহমদ শফী বলেন, ‘কারও বক্তব্যকে ব্যাখ্যা দিতে হলে আপনাকে তার কথা বুঝতে হবে। অনুধাবন করতে হবে। না বুঝে নিজের মতো করে ব্যাখ্যা দাঁড় করানো এক ধরনের অপরাধ। আর খণ্ডিত বক্তব্যকে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা আরও বড় অপরাধ। কোনো কিছু লিখতে চাইলে সুস্থ মস্তিষ্কে চিন্তাশীল হয়ে সঠিক কথাটি লিখবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘একটি মহল আমাকে বিতর্কিত করতে মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছে। আমাকে নারী বিদ্বেষী, নারীশিক্ষাবিরোধী হিসেবে উপস্থাপন করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। আমি এসব কথার জবাব দিয়েছি।’

বিবৃতিতে হেফাজত আমির বলেন, ‘আবারও বলছি, নারীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশে শিক্ষার ব্যবস্থা করুন এবং তাদের জীবন ও ইজ্জতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। কেউ কারও কন্যাকে অনিরাপদ পরিবেশের দিকে ঠেলে দিতে পারে না। কারণ, দৈনিক পত্রিকা খুললেই প্রতিদিন চোখে পড়ছে কোথাও না কোথাও কোনো নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে অথবা খুন করা হয়েছে। নৈতিকতা অর্জন না হলে ধর্ষণ, খুন ও উত্ত্যক্তকরণ বন্ধ হবে না। নারীর প্রতি বৈষম্য দূর হবে না। ইসলামই ফিরিয়ে দিয়েছে নারীর প্রকৃত সম্মান। আমার কথার সারাংশ হলো উচ্চশিক্ষা কিংবা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াতে চাইলে বোরকা পরতে হবে এবং তাদের শিক্ষকও মহিলা হবেন।’

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার চট্টগ্রামের হাটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার বার্ষিক মাহফিলে হেফাজতের আমির উপস্থিতি লোকজনের কাছে মেয়েদের স্কুল-কলেজে না পাঠানোর জন্য ওয়াদা নিয়েছিলেন।

এ সময় তিনি বলেছিলেন, ‘আপনাদের মেয়েদের স্কুল-কলেজে দেবেন না। বেশি হলে ক্লাস ফোর বা ফাইভ পর্যন্ত পড়াতে পারবেন। বিয়ে দিলে স্বামীর টাকা-পয়সা হিসাব করতে হবে। চিঠি লিখতে হবে স্বামীর কাছে। আর বেশি যদি পড়ান, পত্রপত্রিকায় দেখছেন আপনারা, মেয়েকে ক্লাস এইট, নাইন, টেন, এমএ, বিএ পর্যন্ত পড়ালে ওই মেয়ে আপনার মেয়ে থাকবে না। অন্য কেহ নিয়ে যাবে। পত্রপত্রিকায় এ রকম ঘটনা আছে কি না? ওয়াদা করেন। বেশি পড়ালে মেয়ে আপনাদের থাকবে না। টানাটানি করে নিয়ে যাবে আরেকজন পুরুষ।’

তার ওই বক্তবের পর দেশজুড়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এরপর শনিবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি দাবি করেন, তার বক্তব্যের একটি খণ্ডাংশ বিভিন্ন মিডিয়ায় ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। রোববার তিনি এ বিষয়ে আবারও বিবৃতি দেন।

এমবিআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।