অচিরেই বিশ্ব ইজতেমা, আশাবাদ ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৩:০৬ পিএম, ১৩ জানুয়ারি ২০১৯
ফাইল ছবি

তাবলিগ জামাতের বিভক্ত শীর্ষ নেতাদের মধ্যে ঐক্য স্থাপনের মাধ্যমে সকল ধরনের বিভক্তি দূর করে দলমত নির্বিশেষে অচিরেই রাজধানীর উপকন্ঠে টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো.আবদুল্লাহ।

তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কে বা কারা ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের মাধ্যমে মুসলমানদের ধ্বংস করার পায়তারা চালাচ্ছে। এ ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতকে বিভক্ত করে মুসলমানদের ঐক্য বিনষ্ট করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

আজ (রোববার) সচিবালয়ে নিজ দফতরে তাবলিগ জামাতের বিভক্তি ও বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হওয়া ও না হওয়া নিয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতি ও এর সমাধান সম্পর্কে জানতে চাইলে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শেখ মো. আবদুল্লাহ বলেন, ঐক্য প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে তার নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলে ভারতের দেওবন্দ মাদ্রাসায় যাবেন। প্রতিনিধি দলে বিভক্ত দুই গ্রুপের শীর্ষ নেতারা ছাড়াও দেশের খ্যাতনামা আলেম ওলামারা থাকবেন।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রে জানা গেছে, আজ বিকেল ৩টায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে তাবলিগ জামাতের নেতাদের মধ্যে বিবাদমান সমস্যা ও ভারত সফর নিয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হবে। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ওই সভায় উপস্থিত থাকবেন।

World Ijtema

প্রসঙ্গত, তাবলিগ জামায়াতের ভেতরে দু’টি গ্রুপের দ্বন্দ্ব চলছে বেশ কিছুদিন ধরে। চলমান এই দ্বন্দ্ব-সংঘাতের কারণে পূর্ব নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে না এবারের বিশ্ব ইজতেমা।

ভারতীয় উপমহাদেশে সুন্নি মুসলমানদের বৃহত্তম সংগঠন এই তাবলিগ জামায়াতের মধ্যে এই দ্বন্দ্ব প্রথম প্রকাশ্য রূপ পায় ২০১৭ সালে। ওই বছর সংগঠনটির দুই গ্রুপের মধ্যে সহিংসতার ঘটনাও ঘটে। এই দ্বন্দ্বের কেন্দ্রে ছিলেন তাবলিগ জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা ভারতীয় মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্দালভি। তিনি তাবলিগ জামায়াতে এমন কিছু সংস্কারের কথা বলছেন, যা এই আন্দোলনে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে। এ বিভক্তি এখন ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বের তাবলিগ জামায়াতের অনুসারীদের মধ্যে।

সাদ কান্দালভি মতে, ‘ধর্মীয় শিক্ষা বা ধর্মীয় প্রচারণা অর্থের বিনিময়ে করা উচিত নয়।’ মিলাদ বা ওয়াজ মাহফিলের মতো কর্মকাণ্ডও এর মধ্যে পড়ে বলে মনে করা হয়। তিনি আরো মনে করেন, ‘মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষকদের মাদ্রাসার ভেতরে নামাজ না পড়ে মসজিদে এসে নামাজ পড়া উচিত। যাতে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ে।’

কিন্তু তার বিরোধীরা বলছেন, ‘কান্দালভি যা বলছেন তা তাবলিগ জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা নেতাদের নির্দেশিত পন্থার বিরোধী। তাদের বক্তব্য, কান্দালভির কথাবার্তা আহলে সুন্নাত ওয়া’ল জামায়াতের বিশ্বাস ও আকিদার বাইরে।

এদিকে তাবলিগ জামায়াতের এই দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিরসন ও বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠানের বিষয়ে গত ৬ জানুয়ারি উভয় পক্ষকে নিয়েই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১৫ জানুয়ারি একটি প্রতিনিধি দল ভারতের দেওবন্দ মাদরাসায় যাবেন।

এমইউ/এমবিআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।