ভূমি সেবায় প্রতি ধাপেই ঘুষ : টিআইবি


প্রকাশিত: ১২:১৭ পিএম, ২৩ আগস্ট ২০১৫
ছবি - বিপ্লব দিক্ষিৎ

ভূমি বিষয়ক সেবা নিতে জনসাধারণ প্রতিনিয়তই অনিয়ম-দুর্নীতির শিকার হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। ভূমি সংক্রান্ত সেবা কার্যক্রমে ঘুষ লেনদেন, কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে সম্পত্তি আত্মসাৎ, রাজনৈতিক প্রভাব, ভোগদখলসহ এ খাতে চলছে লাগামহীন দুর্নীতি। রোববার রাজধানীর ধানমণ্ডিস্থ টিআইবি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘ভ‚মি ব্যবস্থাপনা ও সেবা কার্যক্রম : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনের সার-সংক্ষেপ উপস্থাপনকালে এ কথা জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে দেশে ভূমি বিরোধ বৃদ্ধি পাচ্ছে, আদালতে মামলার জট সৃষ্টি হচ্ছে। জরিপ, নামজারি, রেজিস্ট্রেশন, নথিপত্র তোলাহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিকের সম্পত্তি অর্জন, ধারণ ও হস্তান্তরের অধিকার থাকলেও ভুমি খাতে ঘুষ ছাড়া কোন কাজ হয় না বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অনিয়ম-দুর্নীতিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাংশ ও প্রভাবশালীদের যোগসাজশের কারণে প্রকৃত ভূমি মালিকরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমি সেবার প্রতিটি পর্যায়ে সেবাগ্রহীতাদের অনিয়ম-দুর্নীতির সম্মুখীন হতে হয় এবং অধিক পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হয়। এমন কোনো সেবা পাওয়া যাবে না যেখানে সেবা গ্রহীতারা অনিয়ম ও দুর্নীতির শিকার হন না।

ভূমি খাতে বিরাজমান ভয়াবহ অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, ভূমি জরিপের সময় কর্মীরা জমির পরিমাণ কম  ও খতিয়ানে ভুল তথ্য লেখার ভয় দেখিয়ে ভূমি মালিকদের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়া, ঘুষের বিনিময়ে খাসজমি, অর্পিত সম্পত্তি, পরিত্যক্ত ও কোর্ট অব ওয়ার্ডসের সম্পত্তি দখলকারী ক্ষমতাবান ও প্রভাবশালীদের নামে রেকর্ড প্রস্তুত, তহশিল অফিসে ঘুষের বিনিময়ে নামজারির প্যাকেজ নির্ধারণ,  কোনো কোনো ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে অবৈধ দখলকৃত খাসজমি, কোর্ট অব ওয়ার্ডসের এবং অর্পিত ও পরিত্যক্ত সম্পত্তি ক্ষমতাবান ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালীদের নামে নামজারি, কৃষি খাসজমি বরাদ্দের  ক্ষেত্রে রাজনৈতিক নেতা, ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের প্রভাব ও স্বজনপ্রীতিসহ নানা ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বর্তমানে বিভিন্ন আদালতে ভূমি সংক্রান্ত ১৮ লাখ মামলার জট রয়েছে। ভূমি ব্যবস্থাপনায় অপর্যাপ্ত জনবল ও বিভিন্ন পদে নিয়োগ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির গবেষণা ও পলিসি বিভাগের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার ওয়াহিদ আলম, ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার নিহার রঞ্জন রায় এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাজমুল হুদা মিনা গবেষণার সার-সংক্ষেপ উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপনির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের এবং গবেষণা ও পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান। উল্লেখ্য, অক্টোবর ২০১৪ থেকে জুলাই ২০১৫ মেয়াদে এই গবেষণাটি পরিচালিত হয়।

এইচএস/এএইচ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।