নুসরাতের কপালে, দোলার গলায় কালচে দাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:৫৭ পিএম, ০৮ জানুয়ারি ২০১৯
সোমবার রাতে রাজধানীর ডেমরার একটি বাড়ি থেকে শিশু দুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ

রাজধানীর ডেমরায় দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, তাদের মধ্যে একজনের কপালে ও আরেকজনের গলায় কালচে দাগ পাওয়া গেছে। তবে সুরতহালে তাদের যৌনাঙ্গে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

পুলিশের তৈরি সুরতহাল প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করেছেন ডেমরা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম।

সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহত শিশু নুসরাত জাহানের কপালে বাম চোখের ওপরে চাপ লাগা কালচে দাগ রয়েছে। নাকের ওপরেও কালচে দাগ রয়েছে। তবে তার কান এবং যৌনাঙ্গ স্বাভাবিক।

নিহত শিশু ফারিয়া আক্তার দোলা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, তার গলার ডানপাশের সামনের দিকে কালচে দাগ রয়েছে। তবে তার যৌনাঙ্গ, নাক ও কান স্বাভাবিক পাওয়া গেছে।

তাদের ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে-এমন অভিযোগ থাকলেও বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সোমবার (৭ জানুয়ারি) রাতে ডেমরার ‘নাসিমা ভিলা’র মোস্তফার ঘর থেকে দুই শিশু নুসরাত জাহান (৪) ও ফারিয়া আক্তার দোলা (৫) মরদেহ পাওয়া যায়। এদিন দুপুর থেকে নিখোঁজ ছিল তারা। পরে তাদের ঘর থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

নুসরাত ও দোলা ডেমরা কোনাপাড়ার হজরত শাহ জালাল রোডে টিনশেড ও পাকা ভবনের পৃথক দুটি বাসায় থাকতো।

পুলিশের ডেমরা থানা জানিয়েছে, এলাকার কেউ কেউ বলছেন মোস্তফা রাজমিস্ত্রি, কেউ বলছেন পোশাক শ্রমিক। তবে সবাই নিশ্চিত করেছে যে সে একজন মাদকসেবী ছিল। সে তার স্ত্রী এবং পাঁচ বছরের ছেলেকে নিয়ে নাসিমা ভিলায় সাবলেট থাকতো। আটক মোস্তফার শ্যালকের নাম জানা যায়নি।

নিহত দোলার চাচা রাশেদুল ইসলাম জানান, দুপুরে দোলা ও নুসরাত খেলতে খেলতে হারিয়ে যায়। তাদের খুঁজতে এলাকাজুড়ে মাইকিং করা হয়। পাশাপাশি ফেসবুকেও ফোন নম্বর ও ছবি দিয়ে প্রচারণা চালানো হয়। মাইকিংয়ের সময় একজন যুবক জানান, স্থানীয় মোস্তফা দুপুরের পর শিশু দুটিকে নিজ ফ্ল্যাটে নিয়ে গেছেন।

পরে ওই যুবকের তথ্যের ভিত্তিতে রাশেদুল মোস্তফার খালাকে নিয়ে সেই ফ্ল্যাটে যান এবং দুই শিশুকে পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় ওই নারী মোস্তফা যাতে ঘর থেকে বের হতে না পারেন সে জন্য বাইরে থেকে তালা দিয়ে আশপাশের লোকজনকে খবর দেন। কিন্তু ততক্ষণে পালিয়ে যায় মোস্তফা।

এদিকে ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মোস্তফাকে আটক করা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। নিহত শিশু দোলার পরিবার দাবি করেছে, মোস্তফাকে আটক করা হয়েছে। তবে আটকের বিষয়টি অস্বীকার করেছে পুলিশ।

নিহত শিশু দোলার মামা মো. হাসান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা থানায় গিয়েছিলাম। সেখানে মোস্তফাকে দেখেছি। গতকাল (সোমবার) রাতে যাত্রাবাড়ী থানাধীন শেখদি এলাকা থেকে মোস্তফার শ্যালক (স্ত্রীর বড় ভাই) তাকে ধরে থানায় দিয়ে আসেন। রাতেই ওসির রুমে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সেসময় আমরা থানাতেই ছিলাম।’

তবে ডেমরা থানার ওসি সিদ্দিকুর রহমান আটকের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘এ ধরনের কোনো খবর থাকলে আমি আপনাদের জানাব। তাকে ধরতে অভিযান চলছে।’

এআর/এসআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।