‘মানবিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ শুরু করতে হবে’

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৬:৫৭ পিএম, ০৫ জানুয়ারি ২০১৯

সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত ‘সম্প্রীতির নির্বাচন, নতুন সরকার ও আগামী দিনের প্রত্যাশা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বিশিষ্টজনরা বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী অপশক্তিকে রুখে দিয়েছে বাংলাদেশ। এবারের নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ১৯৭০ সালের মতো জাগরণ তৈরি হয়েছিল।

শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত এই গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির আহ্বয়ক নাট্যজন পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়। আলোচনায় অংশ নেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি অধ্যাপক মাহফুজা খানক, নারী নেত্রী রোকেয়া কবির, উন্নয়ন ও মানবাধিকার সংগঠক আরমা দত্ত, অর্থনীতিবিদ আর এম দেবনাথ, সাবেক রাষ্ট্রদূত এ কে এম আতিকুর রহমান, অধ্যাপক ড. অসীম কুমার সরকার, অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার, ব্যারিস্টার নাদিয়া চৌধুরী, মেজর জেনারেল এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার (অব.), মতিউর রহমান লালটু, অধ্যাপক অরুণ গোস্বামী, ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া, সাংবাদিক শরীফ শাহাবুদ্দীন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, সাংবাদিক রহমান মুস্তাফিজ প্রমুখ।

সূচনা বক্তব্যে পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘নির্বাচনের আগে দেশের বিভিন্ন স্থানে আমরা ঘুরেছি। আমরা চেয়েছিলাম মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, মানবিক দর্শনের মানুষ এবারের নির্বাচনে জঙ্গিবাদী- সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখে দেয়। আমরা এবারের নির্বাচনে তা পেয়েছি।’

আলোচনায় অংশ নিয়ে মেজর জেনারেল এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার (অব.) বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে সব চক্রান্ত, ষড়যন্ত্রকে পরাজিত করে এক এসিড টেস্টে উত্তীর্ণ হয়েছে বাংলাদেশ। যারা মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করে, তার বিরোধী রাজনীতি করে, তাদের সেই রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ।’

এবারের নির্বাচনের আগে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইর সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে বিএনপি যে প্রার্থী তালিকা প্রণয়ন করেছিল, তা আইএসআই মনোনীত ও লন্ডন থেকে অনুমোদিত।’

২৮৮টি আসনে বিশাল জয়ে ‘আত্মতৃপ্তির সুযোগ নেই’ জানিয়ে তিনি সতর্ক করে দেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারকে। নিরাপত্তা ও ভূ-রাজনীতি বিশ্লেষক মেজর জেনারেল শিকদার (অব.) আরও বলেন, ‘আমাদের পচাত্তরের কথা ভুলে গেলে চলবে না। দেশি-বিদেশি চক্রান্তকারীরা, ষড়যন্ত্রকারী যেকোনো সময় আঘাত হানতে পারে। পচাত্তরের পর এরা বাংলাদেশে কলুষিত রাজনীতি শুরু করেছিল। আমাদের চ্যালেঞ্জ হলো, এদের কবল থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করা।’

সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি নতুন সরকারকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানান বক্তারা।

সাবেক রাষ্ট্রদূত এ কে এম আতিকুর রহমান বলেন, ‘দুর্নীতি হয়তো পুরোপুরিভাবে সমূলে উৎপাটন করা সম্ভব হবে না। তবে এটাকে সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে হবে। না হলে সুশাসন নিশ্চিৎ করা যাবে না।’

আওয়ামী লীগ ঘোষিত ইশতেহার সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে নতুন সরকারকে আহ্বন জানিয়ে ডাকসুর সাবেক ভিপি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য অধ্যাপক মাহফুজা খানম বলেন, ‘আমি প্রথম কথায় বলব, ইশতেহারের প্রতিটি জিনিস এটার জন্য মনিটরিং টিম, চেক আউট লিস্ট থাকতে হবে। ৫০ দিনের কাজ, ১০০ দিনের কাজ সব ঠিক করে নিতে হবে।’

আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগকে নিয়ন্ত্রণ করার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ, যুবলীগের নাম ধরেই বলব এদের ছেড়ে দিলে চলবে না। এদের কন্ট্রোল করা প্রয়োজন। আমি চাই, তারা মানুষ হোক। তারা অন্তত বিবেকবান মানুষ হোক।’

একমুখী শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়নের পাশাপাশি নারী, শিশু ও যুবনীতি সঠিকভাবে বাস্তবায়নের আহ্বন জানান অধ্যাপক মাহফুজা খানম।

এমইউ/বিএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।