উত্তাল মালিবাগ : বাসে আগুন, বেপরোয়া ভাঙচুর

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৩৫ পিএম, ০১ জানুয়ারি ২০১৯

রাজধানীর মালিবাগে সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাসের ধাক্কায় দুই নারী গার্মেন্ট শ্রমিক নিহতের ঘটনায় ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বেপরোয়াভাবে ভাঙচুর চালাচ্ছেন। তারা প্রচেষ্টা পরিবহনের একটি বাসে আগুন দিয়েছেন ও দশটির বেশি বাসে ভাঙচুর চালিয়েছেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পরিস্থিতি উত্তপ্ত রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

শ্রমিকরা এ পর্যন্ত একটি স্বাধীন, দু'টি সুপ্রভাত, একটি তুরাগ ও একটি তরঙ্গ প্লাস, একটি নূরে মক্কা পরিবহন, একটি আকাশ সুপ্রভাত, দু'টি রাইদা ও প্রচেষ্টা পরিবহনের বাসে ভাঙচুর চালিয়েছে।

এ সময় প্রচেষ্টা পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। বাসটিতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখা যায়।

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুলিশের শতাধিক সদস্যকে আবুল হোটেলের সামনে অবস্থান করতে দেখা যায়। মালিবাগ থেকে রামপুরা পর্যন্ত রিকশা ও সিএনজির সীমিতভাবে চলাচল শুরু হয়েছে।

ঘটনাস্থলে পুলিশের আর্মড পারসোনাল ক্যারিয়ার (সাঁজোয়াযান) আনা হয়েছে। পুলিশ তাদের সাথে সমঝোতার চেষ্টা করছে।

jagonews

ঘটনাস্থলে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার সাংবাদিকদের বলেন, ‘শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই এই দুর্ঘটনার পেছনে বাস ড্রাইভারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সর্বোচ্চ বিচারের আশ্বাস দিচ্ছি। গার্মেন্ট কর্মীদের ভেতরে দুষ্কৃতকারী ঢুকেছে আপনারা শান্ত থাকুন, সচেতন থাকুন।’

মঙ্গলবারের এ দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকরা হলেন- নাহিদ পারভীন পলি ও ১৩ বছর বয়সী মিম। তাদের বাসা মালিবাগ পদ্মা সিনেমা হলের বিপরীতে। তারা এমএইচ গার্মেন্টে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।

বেলা দেড়টায় মালিবাগ রেলগেট থেকে আবুল হোটেলের মাঝামাঝি জায়গায় এ ঘটনাটি ঘটে। প্রথমে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পলি মারা যায়। পরবর্তীতে মিমের মরদেহ নিয়ে আসা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। সুপ্রভাত পরিবহনের বাসটি সদরঘাট থেকে গাজীপুর যাচ্ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিক বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে। এ সময় পূর্ব হাজীপাড়ার দু’পাশের সড়কে দাঁড়িয়ে শ্রমিকরা কয়েকটি গাড়িতে ইটপাটকেল ছুড়ে ও ভাঙচুর করে। এরপর ক্রমেই তারা বেপরোয়া হতে শুরু করে।

jagonews

এদিকে মালিবাগ থেকে রামপুরাগামী যানবাহনকে ডাইভারশন দিয়ে মগবাজার থেকে হাতিরঝিলের ভেতর দিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছে পুলিশ।

নিহত পলির বাড়ি নীলফামারী সৈয়দপুর উপজেলায়। সে মগবাজার পূর্ব নয়াটোলায় একটি রুমে ভাড়া থাকতো। তার সঙ্গেই থাকতো মিম।

তার সহকর্মী সুমি সাংবাদিকদের জানান, গার্মেন্টের কোয়ালিটি বিভাগে কাজ করতো পলি ও মিম। দুপুরে খাওয়ার জন্য কর্মস্থল থেকে বাসায় যাওয়ার পথে রাস্তা পারাপারের সময় সুপ্রভাত নামে বাসের ধাক্কায় মারা যায় তারা।

হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু মোহাম্মদ ফজলুল করিম জাগো নিউজকে বলেন, ঘাতক বাসটি জব্দ ও চালককে আটক করা হয়েছে।

এআর/এসএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।