সমাপনী-ইবতেদায়ির ফলে জিপিএ-৫ ও পাসের হারে এগিয়ে মেয়েরা
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী-পিইসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। এবার পাসের হার ৯৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ লাখ ৬৮ হাজার ১৯৩ জন শিক্ষার্থী। এবার পাসের হার ও জিপিএ-৫-এ মেয়েরা এগিয়ে রয়েছে। সোমবার সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান পিইসি-সমাপনী পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে এ পরীক্ষার ফলাফলের সার-সংক্ষেপ তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী। পরে দুপুর ১টায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরেন।
ফলাফলে দেখা যায়, এ বছর ২৬ লাখ ৫২ হাজার ৮৯৬ জন পরীক্ষা দিয়ে ২৫ লাখ ৮ হাজার ৯০৪ জন পাস করেছে। তার মধ্যে ১২ লাখ ১১ হাজার ৬০০ জন ছাত্র ও ১৪ লাখ ৪১ হাজার ২৯৬ জন ছাত্রী রয়েছে। প্রাথমিক সমাপনী ও ইবতেদায়িতে ছেলেদের পাসের হার ৯৭ শতাংশ ৪৮ শতাংশ, আর মেয়েদের পাসের হার ৯৭ শতাংশ ৬৭ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ লাখ ৬৮ হাজার ১৯৩ জন। তার মধ্যে ছেলেরা পেয়েছে ১ লাখ ৬১ হাজার ৪১১ জন ও মেয়েরা পেয়েছে ২ লাখ ৬ হাজার ৭৮২ জন।
ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৯৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১২ হাজার ২৬৪ জন। মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২ লাখ ৭৪ হাজার ৯০৭ জন। এর মধ্যে পাস করেছে দুই লাখ ৬৮ হাজার ৫৫৭ জন। পাস করা পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯৮৮ জন ছাত্র ও ১ লাখ ৩১ হাজার ৫৬৯ জন ছাত্রী।
ফল দেখা যাবে যেভাবে
পরীক্ষার ফল পাওয়া যাবে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের ওয়েবসাইট (http://www.dpe.gov.bd), জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়, উপজেলা/থানা শিক্ষা কার্যালয় এবং নিজ নিজ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
এসএমএসের মাধ্যমে পিইসি পরীক্ষার ফল পেতে হলে মেসেজ অপশনে গিয়ে লিখতে হবে: ডিপিই<স্পেস>থানা/উপজেলা কোড নম্বর<স্পেস>রোল নস্বর>২০১৮ এবং তা পাঠাতে হবে ১৬২২২ নম্বরে।
এবতেদায়ি পরীক্ষার ফল পেতে হলে অপশনে গিয়ে লিখতে হবে: ইবিটি<স্পেস>থানা/উপজেলা কোড নম্বর<স্পেস>রোল নম্বর<স্পেস>২০১৮ এবং তা পাঠাতে হবে ১৬২২২ নম্বরে।
থানা বা উপজেলার কোড নম্বর হিসেবে লিখতে হবে সরকারি বা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইএমআইএস কোড নম্বরের প্রথম পাঁচটি সংখ্যা।
৭ বিভাগে সমাপনীতে পাসের হার
ঢাকা বিভাগে পাসের হার ৯৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ। তার মধ্যে রাজশাহী বিভাগে ৯৭ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ, খুলনা বিভাগে ৯৮ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ, ঢাকা বিভাগে ৯৮ দশমিক ২৫ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে ৯৮ দশমিক ১১ শতাংশ, বরিশাল বিভাগে ৯৭ দশমিক ১২ শতাংশ, সিলেট বিভাগে ৯৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ, রংপুর বিভাগে ৯৮ দশমিক ২০ শতাংশ ও ময়মনসিংহ বিভাগে ৯৬ দশমিক ৩০ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাস করেছে।
৭ বিভাগে ইবতেদায়িতে পাসের হার
রাজশাহী বিভাগে ৯৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ, খুলনা বিভাগে ৯৮ দশমিক ৬৭, ঢাকা বিভাগে ৯৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে ৯৭ দশমিক ১৭ শতাংশ, বরিশাল বিভাগে ৯৮ দশমিক ২৫ শতাংশ, সিলেট বিভাগে ৯৫ দশমিক ৫৮, রংপুর বিভাগে ৯৮ দশমিক ৬১ ও ময়মনসিংহ বিভাগে ৯৬ দশমিক ৬১ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাস করেছে।
শতভাগ পাস ফেল
এবার সমাপনীতে শতভাগ পাস করেছে ৮৩ হাজার ৪৭০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। শতভাগ ফেল করা বিদ্যালয়ের সংখ্যা ২৮৩টি। অন্যদিকে, শতভাগ পাস করেছে ১২ হাজার ৫৭৭টি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা। শতভাগ ফেল করা মাদরাসার সংখ্যা মোট ২৯টি।
উল্লেখ্য, গত ১৮ নভেম্বর শুরু হয়ে প্রাথমিক শিক্ষা ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা শেষ হয় ২৬ নভেম্বর। ৬টি বিষয়ের প্রতিটিতে ১০০ করে মোট ৬০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এবার পরীক্ষার বহুনির্বাচনী প্রশ্ন (এমসিকিউ) বাদ দেয়া হয়। দুই সমাপনীতে এবার প্রায় ৫৭ লাখ শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনীতে এ বছর ৩০ লাখ ৯৫ হাজার ১২৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে প্রাথমিক সমাপনীতে ২৭ লাখ ৭৭ হাজার ২৭০ জন। আর ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ৩ লাখ ১৭ হাজার ৮৫৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়।
এমএইচএম/এসআর/এমকেএইচ