সাংবাদিকদের মোটরসাইকেল ব্যবহারের বিধিনিষেধ প্রত্যাহার দাবি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৫২ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮

নির্বাচন কমিশন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সাংবাদিকদের জন্য মোটরসাইকেল চালানোর বিধিনিষেধসহ যে নীতিমালা জারি করেছে তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজের একাংশের নেতারা।

বিশেষ করে নির্বাচনের দিন ও আগে-পরে মিলিয়ে ৪ দিন সাংবাদিকদের মোটরসাইকেল ব্যবহার ও ভোট কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনে প্রিসাইডিং অফিসারের অনুমতি নেয়ার যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন সাংবাদিক নেতারা। তারা বলেন, স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী নির্বাচন কমিশনের কোনো বিধিনিষেধ সাংবাদিক সমাজ মানবে না।

রোববার গণমাধ্যমে পাঠনো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছেন বিএনপিপন্থী এ সংগঠন দুটির নেতারা। তারা বলেন, সাংবাদিকরা দেশের প্রচলিত আইন ও সাংবাদিকতার নীতিমালা অনুসরণ করে অতীতের মতো স্বাধীনভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালন করবে। অবিলম্বে নীতিমালার নামে জারি করা বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের দাবি জানান সাংবাদিক নেতারা।

বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী ও মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ডিইউজে সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম (২৩ ডিসেম্বর) এক যুক্ত বিবৃতিতে এ দাবি জানান।

বিবৃতিতে সাংবাদিক নেতারা বলেন, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকরা সব সময় সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। অথচ বর্তমান নির্বাচন কমিশন বার বার নানা বিধিনিষেধের বেড়াজালে সাংবাদিকদের আটকানোর অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের সময়ও বিতর্কিত আদেশ জারি করে সমালোচিত হয়েছে।

নেতারা আরও বলেন, সাংবাদিকরা কারো পক্ষ বা প্রতিপক্ষ নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেমন তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব স্বাধীনভাবে পালন করে, তেমনি সাংবাদিকরাও তাদের পেশাগত দায়িত্ব স্বাধীনভাবে পালন করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। মূলধারার গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করলে গুজব ও মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ডালপালা মেলে, এটা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনকে অনুধাবন করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের বিতর্কিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নীতিমালা মানতে সাংবাদিক সমাজ বাধ্য নয়।

বিবৃতিতে সাংবাদিক নেতারা বলেন, সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্বপালনের ক্ষেত্রে প্রধান বাহন হচ্ছে মোটরসাইকেল। কারণ দ্রুততম সময়ে স্পটে পৌঁছতে এবং অলিগলিতে থাকা ভোট কেন্দ্রে যেতে মোটরসাইকেলের কোনো বিকল্প নেই। মোটরসাইকেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা মানে সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্বপালনে অনাকাঙ্ক্ষিত বাধা। সাংবাদিকরা মোটরসাইকেল ব্যবহার করে বা স্বাধীনভাবে দায়িত্বপালন করে সুষ্ঠু নির্বাচনে বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে এমন কোনো নজির নেই।

প্রসঙ্গত, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাংবাদিকদের মোটরসাইকেল চালানো নিষিদ্ধসহ নানা কড়াকড়ি আরোপ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) । এ জন্য একটি নীতিমালাও জারি করেছে নির্বাচন কমিশন।

নীতিমালায় ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে ছবি তোলা, ভিডিও করা এবং তথ্য সংগ্রহ করার কথা বলা আছে। তবে একসঙ্গে একাধিক সাংবাদিক একই ভোটকেন্দ্রের একই কক্ষে একসঙ্গে প্রবেশ করতে পারবেন না। এমনকি ভোটকক্ষ থেকে সরাসরি সম্প্রচার বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সরাসির প্রচার করা যাবে না।

এসব অমান্য করলে বা ব্যত্যয় ঘটলে সংশ্লিষ্ট সংবাদ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আইন, বিধি ও কোড অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলা হয়েছে নীতিমালায়।

নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব (জনসংযোগ শাখা) এসএম আসাদুজ্জামান স্বাক্ষরিত ওই নীতিমালা ২১ ডিসেম্বর জারি করা হয়। নীতিমালায় সাংবাদিকদের এক ডজনের বেশি দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এইচএস/এনডিএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।