টার্গেট শেখ হাসিনাই


প্রকাশিত: ০৭:২২ এএম, ২১ আগস্ট ২০১৫

ঘাতকের টার্গেট যেন বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনাই। বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকারী আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার নিরন্তর চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে ষড়যন্ত্রকারীরা। ১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর আট বার গুলিসহ সরাসরি ১৯ বার হামলার ঘটনা ঘটেছে শেখ হাসিনার ওপর।
 
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে জার্মানীতে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। এসময় ছোটবোন শেখ রেহানা সঙ্গে থাকায় ঘাতকের হাত থেকে তিনিও রক্ষা পান। ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে দলের হাল ধরেন শেখ হাসিনা। দেশে ফেরার আগেই তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।

দেশে ফেরার পরপর শেখ হাসিনার চলাচলের ওপর অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জিয়াউর রহমানের সামরিক সরকার। বাংলাদেশে আসার প্রথমদিন নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে তাকে বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে পর্যন্ত যেতে দেওয়া হয়নি। ঝড়ো বৃষ্টির ওইদিনে তাকে আশ্রয় নিতে হয় ফুফাতো ভাই শেখ সেলিমের বাসায়।  

শেখ হাসিনার রাজনৈতিক পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার জীবনও হুমকির মুখে পড়ে। শেখ হাসিনাকে হত্যার সবচেয়ে বড় ষড়যন্ত্র ছিল ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। ওইদিন বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে জঙ্গি ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী এক জনসভায় বক্তব্য দেন শেখ হাসিনা। বক্তব্য শেষ হতেই শেখ হাসিনার ওপর অতর্কিত গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।  

ওইদিনের গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হন শেখ হাসিনা। তার বাম কান মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়। দীর্ঘ চিকিৎসার পরেও তার বাম কানের শ্রবণশক্তি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। ওই হামলায় তিনি বেঁচে গেলেও দলের ২৪ জন নেতাকর্মী প্রাণ হারান। মারা যান প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী ও মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আইভি রহমানও।

ভয়ঙ্কর ওই গ্রেনেড হামলার প্রধান টার্গেট ছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাই। যে কারণে গ্রেনেড হামলায় বেঁচে গেছেন জেনে ঘাতকরা মুহূর্তের মধ্যেই শেখ হাসিনার ওপর গুলি বর্ষণ করতে থাকে। গুলিতে দেহরক্ষী মারা গেলেও শেষ রক্ষা পান শেখ হাসিনা।  

শেখ হাসিনার ওপর প্রথম প্রকাশ্যে হামলার ঘটনা ঘটে ১৯৮৩ সালে। ওইদিন শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের লালদিঘি ময়দানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন। শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে পুলিশ গুলি চালালে আওয়ামী লীগের ১২ জন কর্মী নিহত হন। প্রাণে রক্ষা পান শেখ হাসিনা।

প্রচার রয়েছে তৎকালীন স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের ইন্ধনেই ওই হামলার ঘটনা ঘটে।

শেখ হাসিনাকে হত্যার আরেক ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র করা হয় ২০০০ সালে। ওই বছর ২০ জুলাই টুঙ্গিপাড়ার কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়। যদিও বোমাটি বিষ্ফোরিত হওয়ার আগেই ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়। ওই হামলার সঙ্গে হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নামের একটি জঙ্গিবাদী সংগঠন জড়িত ছিল বলে দাবি করা হয়।   

এছাড়া ১৯৮৯ সালের ১০ অাগস্ট ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে ফ্রিডম পার্টির নেতৃত্বে হামলার ঘটনা, ২০০২ সালের ৩০ অাগস্ট সাতক্ষীরার কলারোয়ায় বিএনপি কার্যালয়ের সামনে গাড়িবহরে হামলার ঘটনাসহ শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য ১৯ বার চেষ্টা করা হয়।

এসব হামলায় অসংখ্য নেতাকর্মী নিহত হন। আহত হন শত শত মানুষ। প্রতিবার হামলার মূল টার্গেট আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা হলেও শেষ পর্যন্ত প্রাণে রক্ষা পান তিনি। জীবন বাজি রেখে এগিয়ে চলছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা, এগিয়ে নিচ্ছেন বাংলাদেশকেও।   

এএসএস/এসকেডি/একে/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।