ছেলেকে হারিয়েও গর্বিত মাহবুবের মা


প্রকাশিত: ০৪:১৪ এএম, ২১ আগস্ট ২০১৫

২০০৪ সালের আজকের দিনে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিলো। ওই হামলায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাণে বাঁচলেও তাকে বাঁচাতে গিয়ে নিহত হয়েছিলেন তার দেহরক্ষী কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার ফুলবাড়িয়া গ্রামের মাহবুব রশীদ।

প্রিয় নেত্রীকে রক্ষায় পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম মাহবুব রশীদ প্রাণ বিসর্জন দিলে অভাব-অনটনের মধ্যেও আফসোস নেই পরিবারের সদস্যদের।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ট্রাকের ওপর নির্মিত মঞ্চে বক্তব্য চলছিলো। মঞ্চে ছিলেন শেখ হাসিনাসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। হঠাৎ বিকট আওয়াজ। বৃষ্টির মতো গ্রেনেড বিস্ফোরণ। মুহূর্তের মধ্যে চারিদিকে অন্ধকার। শেখ হাসিনার কাছেই ছিলেন তার দেহরক্ষী মাহবুব রশীদ। শেখ হাসিনাকে রক্ষা করতে হবে। তাই জীবন বাজি রেখে শেখ হাসিনাকে নিরাপদে রাখতে সক্ষম হলেও বাঁচতে পারেননি তিনি।
 
ছেলেকে হারিয়েও মা গর্বিত তার ছেলের সাহসিকতায়। তবে আক্ষেপ বোমা হামলাকারীদের আজো দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া। নিহত মাহবুব রশীদের মা হাসিনা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, বঙ্গবন্ধুর বেটিকে বাঁচাতে আমার ছেলে জীবন দিয়েছে। আমি একজন গর্বিত মা। তবে এখন পর্যন্ত সেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত জঙ্গীদের এখনো শাস্তি হয় নাই। তিনি অবিলম্বে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেন, জঙ্গীদের জন্য আমার মতো যেন অন্য কারো মার কোল আর খালি না হয়।

তবে সেই আত্মত্যাগে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখা হলেও তার অনুপস্থিতি আজ কঠিন বাস্তবতার মুখে দাঁড় করিয়েছে মাহবুবের পরিবারকে। নিহত মাহবুব রশীদের বাবা হারুন উর রশিদ মোল্লা জাগো নিউজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত সহযোগিতা ছাড়া ফুলবাড়ি গ্রামের খোঁজ রাখেন না কেউ। আমার স্ত্রী জটিল অসুখে বিছানাগত। তার চিকিৎসার জন্য টাকার প্রয়োজন। এমনকি  অর্থের অভাবে ছোট মেয়ের বিয়ে হয় না। এর আগে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন নিজ উদ্যোগে ভিজিএফ কার্ড ও মাসিক আর্থিক সহযোগিতার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। সেই সহযোগিতা নিয়ে কোনোরকম বেঁচে আছি।

এদিকে দুর্দিনে সরকার মাহাবুবের পরিবারের পাশে দাঁড়াবে সেই সঙ্গে মৃত্যু দিবসে অন্তত তার সমাধিস্থল একটু পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে এমন দাবি পরিবার ও এলাকাবাসীদের। খোকসার এ কৃতি সন্তানের সমাধিস্থল সংরক্ষণ, প্রতি বছর মৃত্যুবার্ষিকীর দিনটি উদযাপনের পাশাপাশি গ্রামের রাস্তটি মাহাবুবের নামে নামকরণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সুধীজন।
 
এমজেড/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।