থেমে নেই জয়কে হত্যার ষড়যন্ত্রও
মুক্তিযুদ্ধের পর পঁচাত্তরে সপরিবারে নিহত হন স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার ওপরও চলেছে কয়েক দফা হামলা। এছাড়া থেমে নেই শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে হত্যার পরিকল্পনাও। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট সেই গ্রেনেড হামলার লক্ষ্যই ছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তবে কয়েক দফায় তিনি বেঁচে যান।
আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের মতে, দলকে ধ্বংসের অপচেষ্টার ধারাবাহিকতায় জয়কে হত্যার ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে সজীব ওয়াজেদ জয়ের উপর হামলার ষড়যন্ত্র করা হয়। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সজীব ওয়াজেদ জয়কেই আগামী দিনের কাণ্ডারি ভাবছে। দলের নেতারা তাকে ভবিষ্যতের নেতা হিসেবেই বিবেচনা করে থাকেন। রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্যও তিনি।
নেতৃত্বের পরবর্তী উত্তরাধিকারী হিসেবে জয়কে সামনে এগিয়ে আনতে দলীয় কাজে সক্রিয় করতে কৌশল ভূমিকা নেন স্বয়ং মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য তিনি জয়কে দেশে ফিরিয়ে আনেন।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ জয় ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ধীরে ধীরে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। ওই নির্বাচনে দলকে ক্ষমতায় আনার ক্ষেত্রে তারও ভূমিকা প্রসংশিত হয়েছে দলে। তার পরামর্শেই নির্বাচনী ইশতেহারে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এর অঙ্গীকার করা হয়। জয়ের মেধা ও কৌশলে ক্ষুব্ধ পরাজিত শক্তি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে হত্যা করে সেনাবাহিনীর একদল উচ্ছৃঙ্খল কর্মকর্তা ও সদস্য। এরপর ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে গ্রেনেড মেরে হত্যার ষড়যন্ত্র করে ঘাতকরা। কিন্তু অল্পের জন্য বেঁচে যান তিনি।
দলটির দাবি, মুক্তিযুদ্ধের পর পরাজিত শক্তির মূল টার্গেট আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করা। সেই উদ্দেশ্য সফল করতে পারেনি পরাজিতরা। এজন্য জয়কে হত্যার চেষ্টা চলছে।
দলীয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ‘হত্যার ষড়যন্ত্র’ করছে বিএনপির অঙ্গ সংগঠন জাসাস। জাসাসের নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন পরিকল্পনাকারী। এমন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে গত ৩ আগস্ট রাজধানীর পল্টন থানায় মামলা হয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান এ মামলা (মামলা নম্বর ১) দায়ের করেন।
‘এজাহারে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা জয়কে ‘অপহরণ ও হত্যা ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ আনা হয়েছে মামুনের বিরুদ্ধে।’
জানা গেছে, মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এবং যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সহ-সভাপতি। কানেক্টিকাটের ফেয়ারফিল্ড কাউন্টিতে পরিবার নিয়ে থাকেন তিনি। অন্যদিকে জয় থাকেন পরিবার নিয়ে ভার্জিনিয়ায়। এক কন্যা সন্তানের জনক তিনি।
এর আগে ক্ষতি করার মানষে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফিআইয়ের কাছে জয়ের তথ্য চেয়ে সংস্থার এক কর্মকর্তাকে ঘুষ দেন এই মামুনের ছেলে রিজভি আহমেদ সিজার। পরে অপহরণের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গত ৪ মার্চ সিজারকে সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন নিউইয়র্কের একটি আদালত।
এ ব্যাপারে গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান (মামলার বাদী) বলেন, ২০১১ সাল থেকেই জয়কে অপহরণ ও হত্যার ষড়যন্ত্র চলছে।
নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান খান জানান, একাত্তরের পরাজিত শক্তি বাহাত্তর সাল থেকেই স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগকে ধ্বংসের অপচেষ্টা করেছিল। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ২০০৪ সালে তার কন্যা শেখ হাসিনাকেও হত্যার চেষ্টা করেছিল তারা। তারই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্রে সজীব ওয়াজেদ জয়ের উপরও হামলা ষড়যন্ত্র চলছে।
এ দেশের মাটিতেই বিএনপি ও তাদের দোসর জামায়াত-শিবিরের কবর রচনা করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা হবে বলেও জানান শাজাহান খান।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আজ শুধু শেখ হাসিনা নয়, তার পুত্রকে হত্যার মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি এবং আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করার পাঁয়তারা চলছে। তা কখনো হতে দেয়া হবে না।
জেইউ/বিএ