‘২৪ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৫৫ পিএম, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮

আগামী ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত সেনাবাহিনী মাঠে থাকবে। তারা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।  

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে শুক্রবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। সেনা সদস্যদের ম্যাজিট্রেসি ক্ষমতা দেয়া হবে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘নির্বাচনী মাঠে বিচারিক ক্ষমতা প্রয়োগে তিন ধরনের কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন ৬৫২ জন, যুগ্ম জেলা জজ থাকবেন ২৪৪ জন। আর জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট থাকবেন ৬৪০। তারা নির্বাচনের ২ দিন আগে থেকে নির্বাচনের পরদিন পর্যন্ত মোট ৪ দিন দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া এক হাজারের মতো নির্বাহী ম্যাজিট্রেট নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ সদস্যদের নিয়ে দায়িত্ব পালন করবেন। এরাই মূলত ভোটের মাঠে বিচারিক দায়িত্ব পালন করবেন। ফলে আলাদা কোনো বাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী সব কাজ প্রায় শেষ। শুধু বাকি প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারদের প্রশিক্ষণ। আরেকটি বিষয় আমাদের প্রস্তুতির ভেতরে আছে। সেটি ব্যালট পেপার তৈরি করা। আমরা আশা করছি, নির্বাচনের ৭ দিন আগে ব্যালট পেপার তৈরি ও তা নির্বাচনী ৩০০ আসনে পৌঁছাতে সক্ষম হব।’

হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, কিছু কিছু নির্বাচনী এলাকায় হাইকোর্ট থেকে কিছু নির্দেশনা আসছে। এ নির্দেশনাগুলোকে সমন্বয় করে ব্যালট পেপার তৈরি করতে হবে। তারপরও নির্বাচনের ৭ দিন আগে ব্যালট পেপার পৌঁছে যাবে। এরই মধ্যে আমরা ব্যালট পেপার তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছি। আশা করছি, রিটার্নিং অফিসারদের কাছে ৭ দিন আগেই ব্যালট পেপার পৌঁছে দিতে সক্ষম হব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামীতে নির্বাচন কমিশনাররা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কর্মকর্তাদের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ দেবেন। আগামী ১৮ ডিসেম্বর রাঙ্গামাটিতে তিন পার্বত্য জেলার নির্বাচনী কর্মকর্তা ও নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইসি সমন্বয় সভা করবে। একই দিন বিকেলে চট্টগ্রামেও একই ধরনের সমন্বয় সভা হবে।’

প্রার্থীদের তরফে ইসিতে এসে অভিযোগ দেয়া হচ্ছে যে, তারা এলাকায় যেতে পারছেন না। এ ধরনের অভিযোগের বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘প্রতিটি অভিযোগই আমরা গুরত্বসহকারে দেখছি। আমলে নিচ্ছি। এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারদের কাছে পাঠাচ্ছি। ইলেকট্রোরাল ইনকোয়ারি কমিটির কাছেও পাঠাচ্ছি। তারা এ সব বিষয় তদন্ত করে দেখছে। বেশ কয়েকটি তদন্ত রিপোর্ট আমাদের হাতেও এসেছে। তাতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচেছ, অভিযোগগুলোর সত্যতা নেই। আর যে অভিযোগগুলোর সত্যতা পাওয়া গেছে সেগুলো নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’

বিএনপির অভিযোগের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল পাওয়া যাচ্ছে কিনা-এমন প্রশ্নে ইসি সচিব বলেন, ‘কমিশন ওইভাবে সিদ্ধান্ত দিয়েছে যে, যদি কোনো পেন্ডিং ওয়ারেন্ট থাকে এবং তা তামিলে আদালতের কোনো তাগিদ থাকে তাহলে তাদের গ্রেফতার করা যাবে। আসলে ওয়ারেন্টভুক্তরা অনেকেই আত্মগোপনে ছিলেন। এখন ভোটের মাঠে তারা দৃশ্যমান হয়েছেন। এ কারণে হয়তো পুলিশ তাদের ধরছে বা ধরার চেষ্টা করছে।’

সাংবাদিকদের ভোট কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত পর্যবেক্ষকদের জন্য (স্থানীয় ও বিদেশি) আলাদা আলাদা নীতিমালা রয়েছে। তবে সাংবাদিকদের জন্য এ ধরনের কোনো নীতিমালা ইসির নেই।’

এর আগে বৃহস্পতিবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভা থেকে সাংবাদিকদের জন্যও একটা নীতিমালা করার প্রস্তাব করা হয়। তবে কমিশনাররা বলেছেন, সাংবাদিকরা ভোট কেন্দ্রে যেতে পারবেন। ছবি তুলতে পারবেন। এমনকি ভোটারদের মতামতও নিতে পারবেন। এসব ব্যাপরে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে সরাসরি সম্প্রচারের ক্ষেত্রে কিছুটা বাধ্যবাধকরা রাখার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। আমরা এ ব্যাপারে পরে বিস্তারিত জানাব।মিরপুরে ড. কামাল হোসেনের ওপর হামলার বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘এ বিষয়টি নিয়ে কমিশনে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। করলে ইসি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।’

ভোটের দিনে সাংবাদিকরা ভোট কেন্দ্রে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবে কিনা-জানতে চাইলে হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন নির্দেশনা দিয়েছে যে, ভোট কেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসারদের কাছে ফোন থাকবে এবং পুলিশ ইনচার্জ ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। অন্যান্যদের কাছে ফোন থাকতে পারে তবে তারা ভোট কক্ষে তা ব্যবহার করতে পারবেন না। এ ব্যাপারে একটা ভীতি আছে। সাংবাদিকরা মোবাইল ফোন নিয়ে যেতে পারবেন। তবে তা কেন্দ্রের ভেতরে ব্যবহার না করে বাইরে ব্যবহার করতে পারবেন। ভেতরে ব্যবহার করলে বিশৃঙ্খলা হতে পারে। যারা ভোট দিতে কেন্দ্রে আসবেন তারাও মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে উৎসাহী হতে পারে। এ ব্যাপারে একটা বিধি-নিষেধ থাকা প্রয়োজন।’

মোবাইল ফোন ব্যবহার নিয়ে আসলে ভয়টা কোথায়- এমন প্রশ্নে সচিব বলেন, ‘ভয়টা কোনো বিষয় নয়। এটা হলো যে, নির্বাচনকে যেন কেউ বানচাল না করতে পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকা। আপনি জানেন, এবার একটু ভিন্ন প্রেক্ষাপটে নির্বাচন হচ্ছে। সব রাজনৈতিক দল এতে অংশ গ্রহণ করছে। একটি রাজনৈতিক সরকার আছে। সব কিছু মাথায় রেখে আমাদের চিন্তা-ভাবনা করতে হবে।’

এইচএস/এনডিএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।