১৯ দিন প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন প্রার্থীরা

ফজলুল হক শাওন
ফজলুল হক শাওন ফজলুল হক শাওন , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৭:২৯ পিএম, ১০ ডিসেম্বর ২০১৮

মঙ্গলবার থেকে সারাদেশে জমজমাট নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চূড়ান্ত প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর থেকেই ২৮ ডিসেম্বর মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত প্রচারণা চালাতে পারবেন। সে হিসেবে এবার প্রার্থীরা ১৯ দিন প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন।

সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা চূড়ান্ত প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার পর প্রার্থী এবং তার সমর্থকরা নির্বাচনী এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন। ইসি সচিবালয়ের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান সোমবার এ তথ্য জানান।

কয়েকজন সংসদ সদস্য প্রার্থীর সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে জানা গেছে, প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর তারা প্রতীক ছাপাতে দিয়েছেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের ১০ বছরের উন্নয়ন সম্বলিত লিফলেট ছাপাতে দিয়েছেন কেউ কেউ। বিএনপি প্রার্থীরা বিএনপি সরকারের শাসনামল, জিয়াউর রহমানের শাসনামল ও তাদের সময় উন্নয়ন সম্বলিত লিফলেট তৈরি করছেন। এতদিন প্রার্থীরা ঘরোয়া মিটিং করে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন। আজ থেকেই প্রার্থীরা পুরো প্রচার প্রচারণায় নামছেন। এখন থেকে প্রার্থীরা মিছিল, মিটিং ও সমাবেশ সব করতে পারবেন।

সাবেক আইনমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সাবেক আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু জাগো নিউজকে জানান, প্রতীক বরাদ্দ হয়ে গেছে। এখন আর প্রচার প্রচারণা চালাতে কোনো বাধা নেই। এখন সমাবেশ, মিছিল, সমর্থকদের নিয়ে দল ধরে নিজ নিজ এলাকায় ভোট প্রার্থনা শুরু করবো। আজ থেকে ২৮ ডিসেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত সমর্থকরা আমার নির্বাচনী এলাকায় দিন-রাত ক্যাম্পেইন করবে।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রচারের সময় আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘন ঠেকাতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। পাশাপাশি ভোটের মাঠে রয়েছে ১২২টি নির্বাচনী তদন্ত কমিটি (ইলেক্ট্রোরাল ইনকোয়ারি কমিটি)। এসব কমিটির কাছে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা নির্বাচনী অপরাধ ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ জানাতে পারবেন।

নির্বাচনী আচরণবিধিতে যা বলা হয়েছে :

প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে প্রচার কাজ শুরু করতে হবে। আর এটা বন্ধ করতে হবে ভোটগ্রহণ শুরুর ৩২ ঘণ্টা আগে। অর্থাৎ ২৮ ডিসেম্বর মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত। সে হিসেবে এবার প্রার্থীরা ১৯ দিন প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন।

নির্বাচনী পোস্টারের সাইজ দৈর্ঘ্যে ৬০ সেন্টিমিটার ও প্রস্থে ৪৫ সেন্টিমিটার এবং ব্যানার কোনোভাবেই তিন মিটারের বেশি হবে না। পোস্টার রঙিন করা যাবে না। পোস্টারে প্রার্থী ছাড়া দলীয় প্রধানের ছবি ব্যবহার করা যাবে। যা দড়িতে ঝুঁলিয়ে প্রচার করতে হবে। ৪শ’ বর্গফুট এলাকার বেশি বড় কোনো প্যান্ডেল করে প্রচার চালানো যাবে না। কাপড়ের তৈরি ব্যানার করে প্রচার চালানো গেলেও ডিজিটাল ডিসপ্লে ব্যবহার করা যাবে না। জনসাধারণের চলাচলের অসুবিধা হয়, এমন কোনো কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকবে হবে। প্রচারের অংশ হিসেবে যে কোনো প্রকার দেয়াল লিখন ও পোস্টার সাঁটানো দণ্ডনীয় অপরাধ।

মাইকে প্রচার চালানো যাবে দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। পাশাপাশি একই নির্বাচনী এলাকাতে কোনো অবস্থাতেই তিনটির বেশি লাউড স্পিকার ব্যবহার করা যাবে না। নির্বাচনী এলাকায় প্রতি ইউনিয়ন আর পৌর এলাকার ওয়ার্ড প্রতি একটির বেশি নির্বাচনী ক্যাম্প করা যাবে না।

মোটরসাইকেলসহ যে কোনো মোটরগাড়িতে করে মিছিল, মশাল মিছিল বা শোভাযাত্রা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কোনো প্রকার বৈদ্যুতিক আলোকসজ্জা করা যাবে না। নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতীক হিসেবে জীবন্ত প্রাণীর ব্যবহার নিষিদ্ধ।

প্রচারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় উপাসনালয় ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে অন্য কোনো প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি সম্মানহানিকর কিছু করতে পারবে না। উসকানিমূলক কোনো বক্তব্যও দেয়া যাবে না।

প্রচারণায় সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সব সুবিধা ত্যাগ করে প্রচার কাজে অংশ নিতে হবে। কোনো ডাক বাংলো, সরকারি গাড়ি ব্যবহারসহ প্রটোকল ছেড়ে এলাকায় যেতে হবে। তবে বিশেষ আইনে অনুমতি থাকায় নিরাপত্তার কারণে প্রটোকল পাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দলীয় প্রধান ছাড়া অন্য কেউ হেলিকপ্টার ব্যবহার করতে পারবেন না।

এফএইচএস/এসএইচএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।