বাস চলাচল বন্ধে যাত্রীদের ভোগান্তি
নওগাঁর বাসকে বগুড়ার রুটে চলাচল করতে না দেয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রী এবং বাস মালিকদের। নওগাঁ থেকে ঢাকার বাস বগুড়ার রুটে চলাচল না করায় যাত্রীদের বগুড়া-সান্তাহার থেকে এবং রাজশাহী হয়ে ঢাকায় যেতে হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন সময় ব্যয় হচ্ছে তেমনি যাত্রীদের গুণতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া।
তবে কবে নাগাদ এ ভোগান্তি শেষ হবে তা জানেন না নওগাঁ পরিবহন মালিক গ্রুপ ও মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন। ঢাকা বাসস্ট্যান্ড কাউন্টার বন্ধ থাকায় তা যাত্রী শুন্য হয়ে গেছে। বাস চলাচল না করায় যাত্রী শূন্য বাসস্ট্যান্ডে দোকানিদের বেচা বিক্রিও বন্ধের পথে।
জানা গেছে, গত ৩ আগস্ট নওগাঁর শ্রমিক ইউনিয়নের গাড়িটি ঢাকার মহাখালীতে আটকে দেয় শাহ ফতেহ আলী পরিবহন কর্তৃপক্ষ। ২০১৩ সালের ৩ সেপ্টেম্বর মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের আঞ্চলিক কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক বগুড়া ও নওগাঁ শ্রমিক ইউনিয়নের দুটি গাড়ি ‘শাহ ফতেহ আলী’ ব্যানারে সাপাহার থেকে নিয়মিত ঢাকায় চলাচল করার কথা। পরে চুক্তি লঙ্ঘন করে তারা নওগাঁ মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের বাসটি ওই রুট থেকে বাদ দিয়ে কেবল তাদের নিজস্ব বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
ওই ঘটনার প্রতিবাদে নওগাঁ মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন শাহ ফতেহ আলীর একটি গাড়ি সাপাহারে আটকে দেয়। পরদিন বুধবার (৪ আগস্ট) বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন নওগাঁ সকাল থেকে ঢাকা-সিলেট-চট্টগ্রাম রুটের যাত্রীবাহী বাস বগুড়ার চারমাথায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে গাড়ির স্টাফদের লাঞ্ছিত করাসহ ফিরিয়ে দেয়।
ওই ঘটনার পর থেকে থকে বগুড়ার ওপর দিয়ে নওগাঁ মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সকল বাস চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে এবং নওগাঁ মোটর শ্রমিক নওগাঁ-বগুড়া রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। ফলে গত ১৭ দিন থেকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রী এবং বাস মালিকদের।
সাপাহার উপজেলা থেকে আসা যাত্রী শাহিন জানান, আগামীকাল ঢাকায় একটি পরীক্ষা দিতে যাবেন। হানিফ কাউন্টারে ৩ ঘণ্টা থেকে অপেক্ষা করছেন। কখন বাস ছাড়বে বলা যাচ্ছে না।
আবাদপুকুর থেকে আসা যাত্রী আব্দুল মালেক জানান, ২ ঘণ্টা থেকে কাউন্টারে অপেক্ষা করছেন। ঠিক সময় বাস ছাড়ার কথা থাকলে তা ছাড়া হচ্ছে না। নিয়মিত বাস চলাচল না করায় এ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বেকারি দোকানদার সাইদুর রহমান এবং চায়ের দোকানদার মুসলেম উদ্দিন জানান, আগে বেচা বিক্রি ভাল হতো। বাস চলাচল না করায় বেচা বিক্রি বন্ধের পথে। এখন একবেলা দোকান চালাই।
হানিফ গাড়ির চালক রিংকু জানান, আগে প্রতিদিন গাড়ি চালাতে হতো। যাত্রী না থাকায় এখন ৩ দিন পর পর গাড়ি চালাতে হচ্ছে। রাজশাহী দিয়ে ঢাকায় যেতে প্রায় ১০০কি.মি বেশি দূর দিয়ে ঢাকায় যেতে হচ্ছে। গাড়ি চালানো কম হওয়ায় অভাবে দিন যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
সোনারতি কাউন্টার মাস্টার জিল্লুর রহমান জানান, আগে প্রতিদিন ঢাকার ৪টি এবং চট্টগ্রামে একটি করে গাড়ি চলাচল করত। যাত্রী সমস্যার কারণে সারাদিন একটি গাড়িও চলে না।
নওগাঁ জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক জানান, বিষয়টি সমাধানের জন্য গত ৯ আগস্ট সড়ক ও সেতুমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এছাড়া নওগাঁ-বগুড়া শ্রমিক ইউনিয়নের দ্বন্দ্বের জন্য নওগাঁ-নাটোর আঞ্চলিক মহাসড়কটি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়।
এসএস/এমআরআই