আজ নিজ ঘরে ফিরছে সুরাইয়া


প্রকাশিত: ০৫:১১ এএম, ২০ আগস্ট ২০১৫

মাতৃগর্ভে গুলিবিদ্ধ নবজাতক শিশু সুরাইয়া মায়ের সঙ্গে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে আজ। দুপুর ১২টায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের উপস্থিতিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিশু সুরাইয়া ও তার মা নাজমা বেগমকে আনুষ্ঠানিকভাবে হাসপাতাল থেকে রিলিজ করে দেবেন।

ঢামেক হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কানিজ হাসিনা শিউলী বৃহস্পতিবার সকালে জাগো  নিউজকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শিশু সুরাইয়া এখন সুস্থ আছে। ধীরে ধীরে তার ওজন বাড়ছে। বুধবার তার ওজন ছিল ২০৮০ গ্রাম। আজ তার ওজন ২১৪০ গ্রাম। হাসপাতাল থেকে ছাড়ার আগে গত  দু’দিনে সুরাইয়ার রক্তসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। কোন ধরনের শারীরিক জটিলতা পাওয়া যায়নি।

তিনি জানান, শিশুটির হার্টে যে অস্বাভাবিক ধরনের শব্দ হতো সেটাও এখন আর নেই। চোখের সমস্যা থাকলেও চক্ষু বিশেষজ্ঞরা কিছুদিন পর এসে অস্ত্রোপচার করার পরামর্শ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা শেষবারের মতো সুরাইয়ার শারীরিক অবস্থার সার্বিকদিক পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাব্যবস্থা প্রদান করবেন। অপেক্ষাকৃত কম ওজন হওয়ায় মায়ের বুকের দুধের পাশাপাশি ভিটামিন, ফলিক এসিড ও আয়রন খাওয়ানোর ব্যাপারে পরামর্শ দেয়া হবে।

ডা. শিউলী যিনি শুরু থেকেই সুরাইয়ার চিকিৎসার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন তার কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বলেন,  তারা সকলেই (ডাক্তার, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারী) সুরাইয়াকে সুস্থ অবস্থায় মায়ের বুকে ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, এ কাজটি করতে পেরে তারা আনন্দিত ও গর্বিত।

শিশু সুরাইয়া ও তার মা নাজমা বেগমকে আনুষ্ঠানিক বিদায় জানাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন। ঢামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. নাজিমুননেছা জানান, হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে তাদের রিলিজ দেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, ২৩ জুলাই মাগুরায় মাতৃগর্ভে গুলিবিদ্ধ নবজাতক সুরাইয়াকে গত ২৬ জুলাই ভোরবেলায় মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়। জন্মের পর সুরাইয়া কাঁদেনি, শ্বাস-প্রশ্বাসও প্রায় ছিলনা। চিকিৎসকরা কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক করেন। জন্মগতভাবে তার হৃদপিণ্ডে ছিদ্র ছিল। স্বাভাবিক নবজাতকের চেয়ে তার জন্ম অনেক আগে হয়। ওজনও ছিল অনেক কম। ঢামেক হাসপাতালে ভর্তির পর তার দেহে অস্ত্রোপচার করা হয়। শিশুটির শরীরে ২৩টি সেলাই পড়ে। প্রথমে ওয়ার্ডে ও পরে তাকে নিওনেটাল কেয়ার ইউনিটে রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়। চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মৃত্যুর মুখ থেকে সুরাইয়া বেঁচে আসে। দিন দুয়েক আগে তাকে মায়ের কাছে কেবিনে দেয়া হয়। ২৬দিন ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ শেষে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে সুরাইয়া বাবা মায়ের সঙ্গে গ্রামের বাড়ি মাগুরায ফিরে যাবে।

জানা গেছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকরা শিশুটিকে আর্থিক সহায়তা ও উপহার দিবেন। এর মধ্যে ডা. শিউলি ব্যক্তিগত উদ্যোগে আত্মীয়স্বজন ও নিজের ফান্ড থেকে অর্ধলাখ টাকা শিশুটিকে উপহার দিবেন।

এমইউ/এআরএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।