জরুরি বৈঠকে ভিকারুননিসার শিক্ষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:৫৪ এএম, ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮

বাবা-মাসহ শিক্ষকদের আছে অপমানিত হয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রি অধিকারীর আত্মহত্যার পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরুরি বৈঠকে বসেছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুলের শিক্ষকরা। অরিত্রির আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় গতরাতে গ্রেফতার হয়েছেন হাসনা হেনা নামে প্রতিষ্ঠানটির একজন শ্রেণি শিক্ষিকা।

সোমবার দুপুরে অরিত্রির আত্মহত্যার পর মঙ্গলবার থেকে উত্তপ্ত দেশের অন্যতম সেরা এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

শিক্ষকরা আজ যে বৈঠকে বসেছে সেখানে যেসব বিষয়ে আলোচনা হতে পারে তার মধ্যে রয়েছে- গ্রেফতার শিক্ষকের মুক্তি, নতুন করে কাউকে গ্রেফতার না করা ইত্যাদি।

দুই শতাধিক শিক্ষক বৈঠকে উপস্থিত আছেন বলে জানা গেছে। বেইলি রোডে প্রতিষ্ঠানটির মূল ক্যাম্পাসে এ বৈঠক চলছে। আজিমপুর, বসুন্ধরা ও ধানমন্ডি শাখার শিক্ষকরাও বৈঠকে যোগ দেবেন। বিভিন্ন শাখা মিলে এ প্রতিষ্ঠানে ৮ শতাধিক শিক্ষক রয়েছেন।

খুরশিদ জাহান মালা নামে ভিকারুননিসার এক শিক্ষক এ বৈঠকের বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি বলছেন, আমরা নানভাবে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দ্বারা লাঞ্ছিত হচ্ছি। আমরা শিক্ষার্থীদের মানুষ করি অথচ আমাদের হত্যাকারী বলে ধিক্কার দেয়া হচ্ছে। ঘর-সংসার রেখে আমরা শিক্ষার্থীদের মানুষ করার দায়িত্ব পালন করি।

এদিকে আজ বৃহস্পতিবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি আগের দিনের চেয়ে কম হওয়ায় আন্দোলনে নামা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে তারা। তবে আর আন্দোলনে নামার পক্ষে নন অনেক অভিভাবক। এই অভিভাবকরা বলছেন, আমাদের দাবি পূরণ হয়েছে। নতুন করে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট করতে চাই না। আমরা সবাই মিলে প্রতিষ্ঠানটি গুছিয়ে নিতে চাই।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর শান্তিনগরের নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয় অরিত্রি। মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল (ঢামেক) কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অরিত্রির আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে গতকাল তারা বাবা দিলীপ অধিকারী বলেছিলেন, অরিত্রির স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। গতকাল রোববার সমাজবিজ্ঞান পরীক্ষা চলার সময় তার কাছে একটি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। এজন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের ডেকে পাঠায়। সোমবার স্কুলে গেলে স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানায়, অরিত্রি মোবাইল ফোনে নকল করছিল, তাই তাকে বহিষ্কারের (টিসি) সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ আমার মেয়ের সামনে আমাকে অনেক অপমান করে। এই অপমান এবং পরীক্ষা আর দিতে না পারার মানসিক আঘাত সইতে না পেরে সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। বাসায় ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয় অরিত্রি।

এ ঘটনার পর মঙ্গলবার রাত ১০টায় রাজধানীর পল্টন থানায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, প্রভাতী শাখার প্রধান জিনাত আক্তার ও শ্রেণি শিক্ষিকা হাসনা হেনার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচণার মামলা দায়ের করেন অরিত্রির বাবা।

এরপর শিক্ষামন্ত্রণালয় ওই তিন শিক্ষককে বরখাস্তোর নির্দেশ দেয়। রাতে গ্রেফতার হন হাসনা হেনা।

এমএইচএম/এনএফ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।