প্লট-ফ্ল্যাটের সঙ্গে পৌনে ১ কোটি টাকার গাড়ির মালিক কামরুল
ক্ষমতার দ্বিতীয় মেয়াদে দুই প্লট, দুই ফ্ল্যাটের সঙ্গে পৌনে এক কোটি টাকার গাড়ির মালিক হয়েছেন ঢাকা-২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। তিনি ২০০৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর আইন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন। দ্বিতীয় মেয়াদে খাদ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে সম্পদ বেড়েছে হু হু করে। ২০০৮ সালের নবম, ২০১৩ সালের দশম ও আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামা থেকে এ সব তথ্য জানা যায়।
হলফনামার তথ্য থেকে জানা যায়, সংসদ সদস্য হওয়ার আগে আইন পেশা থেকে আয়ের পাশাপাশি কামরুল ইসলামের স্ত্রী চাকরি থেকে আয় করতেন। প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর আইন পেশার আয় বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি স্ত্রীর আয়ও বন্ধ হয়ে যায়।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া হলফনামায় কামরুল ইসলাম হিসেবে দিয়েছেন, বাড়ি ভাড়া থেকে আয় ১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা, মন্ত্রী হিসেবে ২৩ লাখ ২৭ হাজার ৫৮০ টাকা সম্মানী, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা ভাতা, ব্যাংক সুদ ও টকশো থেকে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৫৮ টাকা বছরে আয় করছেন।
হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেছেন, অকৃষি জমি ও অর্জনকালীন সময়ে আর্থিক মূল্য (ক) ৪ কাঠা জমি, মিরপুর হাউজিং স্টেট-মূল্য ৩ লাখ ৬১ হাজার ৬০০ টাকা, (খ) ১০ কাঠা জমি, পুর্বাচল-নিউ টাউন, ঢাকা- মূল্য ৩৩ লাখ ৩১ হাজার ৭০০ টাকা, মোট মূল্য ৩৬ লাখ ৯৩ হাজার ৩০০ টাকা। দালান, আবাসিক বা বাণিজ্যিক সংখ্যা, অবস্থান ও অর্জনকালীন সময়ে আর্থিক মূল্য (ক) ০৪৩২ অযুতাংশে জমিতে ৪৮/১ আজগর লেনে পৈত্রিক বাড়ি ৪ তলা বিল্ডিংয়ের ৯৬৬ দশমিক ৪৬ বর্গফুট, যার মূল্য হিসেবে ১২ লাখ ৬৫ হাজার ৮৯১ টাকা। বাড়ি অ্যাপার্টমেন্ট সংখ্যা ও অর্জনকালীন সময়ে আর্থিক মূল্য হিসেবে ১ দশমিক ৭৫ কাঠা জমিতে মিরপুর আবাসিক ২টি ফ্ল্যাট মূল্য ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৭০৭ টাকা।
কামরুল ইসলামের অস্থাবর সম্পদ হিসেবে নগদ ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ব্যাংকে জমাকৃত ৪১ লাখ ১ হাজার ২৭৮ টাকা রয়েছে। পাশাপাশি ৭৩ লাখ ৯০ হাজার ৮৩১ টাকা মূল্যের ইকট টয়োটা গাড়ির কথা বলা হয়েছে হলফনামায়।
২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় তিনি স্থাবর সম্পদ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন, ৪ কাঠাভূমির মূল্য ৩ লাখ ৬১ হাজার ৬০০ টাকা, ১০০৪ বর্গফুটের পৈত্রিকবাড়ির ৩ ভাগের ১ ভাগ ৩৩৪ বর্গফুট। কামরুল ইসলাম ওই পর্যন্ত বছরে ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা আয় করতেন আইন পেশা থেকে। ওই সময়ে তার স্ত্রী মাসে চাকরি থেকে ১০ হাজার টাকা আয় করতেন। সে সময় অস্থাবর সম্পদ হিসেবে নিজ নামে নগদ টাকা ছিল ৪ লাখ ৩২ হাজার, আর স্ত্রীর নামে ছিল ৫ হাজার টাকা। আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা জমা ছিল নিজ নামে, আর স্ত্রীর নামে জমা ছিল ১০ হাজার টাকা।
২০১৩ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় স্থাবর সম্পদ হিসেবে পৈত্রিক বাড়ির কথা উল্লেখ করেননি। ওই হলফনামায় অকৃষি জমি ও অর্জনকালীন সময়ে আর্থিক মূল্য হিসেবে ২৯ লাখ ৯৮ হাজার ৩০৭ টাকা ও দালান, আবাসিক বা বাণিজ্যিক সংখ্যা, অবস্থান ও অর্জনকালীন সময়ে আর্থিক মূল্য ১০ লাখ ৭৪ হাজার ৫০০ টাকা উল্লেখ করেন। ২০১৩ সালে কামরুল ইসলাম বাড়ি ভাড়া থেকে আয় করতেন ১ লাখ ৮ হাজার থাকা। প্রতিমন্ত্রী হিসেবে বছরে ৫ লাখ ৭৩ হাজার ৬০ টাকা ও টিভি টক শো এবং ব্যাংক সুদ থেকে বছরে ৯৩ হাজার ৩০৪ টাকা আয় করতেন। অস্থাবর সম্পদ হিসেবে নগদ টাকা ছিল ৩ লাখ টাকা, ব্যাংকে জমা ছিল ১৮ লাখ ১৪ হাজার ৪৭ টাকা। ওই সময়ে স্ত্রীর আয় ও অস্থাবর সম্পদ হিসেবে কিছুই ছিল না। ওই বছর অস্থাবর সম্পদ হিসেবে ৬১ লাখ ৬৫ হাজার ৮১ টাকা দামের একটি মটর গাড়ির কথা উল্লেখ করা হয়।
এইউএ/এমএমজেড/জেআইএম