নির্বাচন না হলে পরিণতি হবে ভয়াবহ : বদিউল আলম

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৫৩ পিএম, ০১ ডিসেম্বর ২০১৮

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, আগামী নির্বাচনটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়া দরকার; যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচন যদি না হয় তবে ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে।’

শনিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচার একটি রেস্তোরাঁয় ‘জাতীয় নির্বাচন : গুজব ও সহিংসতা প্রতিরোধে সম্প্রচার মাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে আলোচকের বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

‘মিডিয়া মিউজিয়াম অব বাংলাদেশ’ আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে তিনি আরও বলেন, ‘গত নির্বাচনে অনেকে ভোটাধিকার হতে বঞ্চিত হয়েছেন। অনেক তরুণ বঞ্চিত হয়েছেন। গণতন্ত্র হচ্ছে ইচ্ছার প্রতিফলন। আমি চিন্তিত যে, আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যদি মতামতের প্রতিফলন না ঘটে, আবারও যদি আমাদের তরুণরা ভোটাধিকার বঞ্চিত হয়; তাহলে তারা হাল ছেড়ে দিতে পারে, হতাশ হতে পারে, আস্থা হারিয়ে ফেলতে পারে। আপনাদের মতো তরুণরা যদি আস্থাহীন হয় তবে ভিন্ন পথ নিতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘তরুণরা আস্থাহীন হলে ভিন্নভাবে সমাধানের পথ খোঁজে। যা অত্যন্ত বিপদ, ভয়ানক, কখনও নৃশংস বটে। তাই আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুসংহত হওয়া, কার্যকর হওয়া এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার হাতে সমস্যার সমাধান হওয়া অতীব জরুরি। তা না হলে আমাদের ভয়ানক পরিণতি বরণ করতে হতে পারে। এজন্য আমাদের সকলের ভূমিকা রয়েছে। সেজন্য আমরা সবাই চেষ্টা করছি।’

সুজন সম্পাদক বলেন, ‘সংবিধানের প্রস্তাবনায় রয়েছে গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ ও সামাজিক ন্যায় বিচারের কথা। গণতন্ত্রের জন্য, আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের জন্য আমরা ১৯৭১ সালে অস্ত্র ধরেছি, রক্ত দিয়েছি। আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের ক্ষেত্রে নির্বাচন কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ।’

‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনার প্রধান মাধ্যম হচ্ছে নির্বাচন। নির্বাচন হতে হবে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতামূলক। এর একটা সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে। এক্ষেত্রে রয়েছে সকলেরই ভূমিকা।’

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন উপলক্ষে এখন হলফনামা নিয়ে মিডিয়া কাজ করছে। এসব প্রকাশ করার জন্য আমাদের বহু লড়াই করতে হয়েছে। তথ্য জানার যে অধিকার সেটা বাস্তবায়নের জন্য আমাদের আদালত পর্যন্ত যেতে হয়েছে।’

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় গুজব বা অপপ্রচার পর্বতসম বাধা। এটা কাটানো চ্যালেঞ্জও বটে। এক্ষেত্রে সকলের ভূমিকা রয়েছে। আমেরিকার মতো দেশ তাদের নির্বাচনী ব্যবস্থা সুষ্ঠু ছিল না, বলছে। রাশিয়ানরা নাকি তাদের নির্বাচন প্রভাবিত করেছে। ট্রাম্প স্বীকার না করলেও বলতে বাধ্য হয়েছে যে, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। আমেরিকায় যদি ফেক নিউজের মাধ্যমে নির্বাচনকে প্রভাবিত করা যায়, তাহলে বাংলাদেশে এটা আরও সাংঘাতিক হবার সুযোগ থাকে। মনে করুন সেই নাসিরনগর, রামুর ঘটনা।’

তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য ফেক নিউজ কিংবা গুজব বিরাট হুমকি এবং তা মোকাবেলা চ্যালেঞ্জও বটে। গণতন্ত্র, জাতির ভবিষ্যৎ, সহিংসতার কথা যদি বাদও দেই ‘ফেক নিউজ’ পেশাগত জীবনের জন্য হুমকি।“

সুজন সম্পাদকের দাবি, ‘আমি মনে হয় বাংলাদেশের একমাত্র ভিকটিম যে ফেক ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বেশি হয়রানির শিকার হয়েছে, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য পরিবেশন হয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের আমলে আমরা বিরোধী শক্তি হিসেবে হয়রানির শিকার হয়েছি। এ আমলেও আমাদের ষড়যন্ত্রকারী, চক্রান্তকারী হিসেবে দেখা হচ্ছে। অবশ্য নির্বাচন নিয়ে কাজ করলে এটা হবে।’

মিডিয়া মিউজিয়াম অব বাংলাদেশ’র প্রধান ও এসএটিভি’র অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর এম এম বাদশার সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন চ্যানেল ২৪-এর বার্তা প্রধান রাহুল রাহা, ইনডিপেনডেন্ট টিভির সিএনই আশীষ সৈকত, এসএটিভির সিএনই ফেরদৌস মামুন বক্তব্য রাখেন।

জেইউ/এমএআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।