রাজধানীতে গ্যাসের জন্য হাহাকার

মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল
মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৮:২৩ পিএম, ২৮ নভেম্বর ২০১৮
ফাইল ছবি

পুরান ঢাকার লালবাগের বাসিন্দা সুলতানা ইসলামের ঘরে সকাল থেকে চুলা জ্বলেনি। সাত সকালে ঘুম থেকে উঠে স্কুলপড়ুয়া দুই ছেলে-মেয়ের নাস্তা তৈরি করতে গিয়ে দেখেন চুলায় গ্যাস নেই।

চাকরিজীবী স্বামী নজরুল ইসলামকে দিয়ে বাইরে থেকে নাস্তা কিনে আনেন। স্বামী ও সন্তানদের বিদায় দিয়ে দুপুরের খাবার রান্নার প্রস্তুতি নিতে থাকেন। কিন্তু সকাল গড়িয়ে দুপুর, দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলেও গ্যাস আর আসে না।

বুধবার সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে সুলতানা ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেড় দুই মাস ধরে গ্যাসের কষ্টে ভুগছি। কখনও সকালে কখনও দুপুরে কিংবা কখনও রাতে গ্যাস আসে। স্কুল থেকে ফেরা সন্তানদের বাইরে থেকে ফাস্টফুড কিনে এনে খাওয়াতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান তিনি।

গ্যাসের জন্য হাহাকার শুধু সুলতানা ইসলামের একা নন, গোটা ঢাকা শহরে গ্যাসের ভয়াবহ সংকট চলছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকার বিভিন্ন এলাকা-শাঁখারীবাজার, পাটুয়াটুলী, ইসলামপুর, বাংলাবাজার, লক্ষ্মীবাজার, বংশাল, আরামবাগ, আর কে মিশন রোড, টিকাটুলী, মীর হাজারীবাগ, যাত্রাবাড়ী, পোস্তগোলা, জাফরাবাদ, লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর ,কেরানীগঞ্জ, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, আদাবর, মিরপুর, পল্লবী, কাফরুল, কাজীপাড়া, ইন্দিরা রোড, কলাবাগান, শুক্রাবাদ, কাঁঠালবাগান, মগবাজার, মালিবাগ, রামপুরা, বনশ্রী, বাসাবো, বারিধারা ও কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় গ্যাসের তীব্র সংকটের খবর পাওয়া গেছে।

তিতাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির অভিযোগ কেন্দ্রে কর্তব্যরত একাধিক কর্মকর্তা জানান, বুধবার একদিনে যত অভিযোগ এসেছে গত দুই সপ্তাহে এত অভিযোগ পাইনি। সত্যিকার অর্থেই গ্যাসের সরবরাহ নেই বললেই চলে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিতাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির কর্মকর্তারা জানান, ঢাকা শহরে প্রতিদিনের চাহিদা ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট। পেট্রোবাংলা সরবরাহ করছে ২৬৯ মিলিয়ন ঘনফুট। চাহিদা অনুসারে ঘাটতি সব সময় থাকে।

গত মাসের শেষ সপ্তাহে চট্টগ্রামের মহেশখালীতে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের (আরপিজিসিএল) প্ল্যান্ট যন্ত্রাংশে মারাত্মক ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।

ফলে গ্যাসের সরবরাহ কমে যায়। এ সময় রাজধানীতে গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সার কারখানাগুলোতে গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছিল। দুদিন ধরে সার কারখানাগুলো চালু হওয়ায় গ্যাসের সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানান তারা।

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আরমানুর রেজা ভুঁইয়ার গ্যাস সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি অবহিত রয়েছেন এবং গ্যাসের সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন।

এমইউ/জেএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।