কমেছে ব্যানার-পোস্টার, মুছে ফেলা হচ্ছে দেয়াল লিখন
‘ভাইরে কইছিলাম, কত কষ্ট কইরা পোস্টার লাগাইছি, কার এত্তো বড় সাহস পোস্টার ছিঁড়ে, অর হাড্ডিগুড্ডি ভাইঙা দিমু না ’। কিন্তু ভাই কইলো ‘অই বেডা তোরা কি ইলেকশন করতে দিবি না, পোস্টার থাকলে নির্বাচন কমিশন শাস্তি দিব।’
‘ভাইয়ের মুখে এ কথা হুইনা আমরা চুপ মাইরা গেছি। সিটি কর্পোরেশনের লোকেরা কাইলও (গতকাল) সারাদিন পোস্টার ছিঁড়ছে, দেয়ালের লেখা মুইছা দিছে। চাইয়া চাইয়া খালি দেখছি। ’
এমন মন্তব্য আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণেচ্ছু পুরান ঢাকার এক প্রার্থীর ক্ষেপাটে সমর্থকের। আজ (মঙ্গলবার) দুপুর সোয়া ১২টায় লালবাগের পলাশী মোড়ে দাঁড়িয়ে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি ওই মন্তব্য করেন।
আলাপকালে তিনি আরও বলেন, ‘ভাইয়ের পোস্টারে পুরা এলাকা ছাইয়া ফালাইছিলাম। অহন পোস্টার ছিঁড়তে দেইখ্যা মনডা খারাপ লাগতাছে।’
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্দেশনা অনুযায়ী রোববার রাত ১২টার মধ্যে সব নির্বাচনী প্রচার সামগ্রী সরিয়ে ফেলার কথা ছিল। কিন্তু সোমবার পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার-ব্যানারসহ অন্যান্য নির্বাচনী প্রচার সামগ্রী চোখে পড়ে। তবে গতকালের (সোমবার) তুলনায় আজ (মঙ্গলবার) অপেক্ষাকৃত কম সংখ্যক পোস্টার, ব্যানার ও দেয়াল লিখন চোখে পড়ে।
সরেজমিন দেখা গেছে বিভিন্ন এলাকার দেয়ালে পোস্টার, ব্যানার ও দেয়াল লিখন না থাকলেও একটু উচুঁতে টাঙানো পোস্টার ও ব্যানার এখনও রয়ে গেছে। সংসদ নির্বাচনে আগ্রহী প্রার্থী ছাড়াও ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের পোস্টার বেশি দেখা গেছে। সে তুলনায় বিরোধী দলের নেতাদের পোস্টার-ব্যানারের সংখ্যা কম।
ইসির নির্দেশ অনুযায়ী ১৮ নভেম্বর রাত ১২টার মধ্যে মার্কেট, রাস্তাঘাট, যানবাহন ও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনাসহ অন্যান্য জায়গায় যাদের নামে পোস্টার, লিফলেট, ব্যানার, ফেস্টুনসহ প্রচার সামগ্রী রয়েছে তাদেরকে এবং যেসব ব্যক্তি বা যৌথ মালিকানাধীন ভবন, প্রতিষ্ঠান, মার্কেট, যানবাহন ও স্থাপনায় প্রচার সামগ্রী রয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠান ও মালিকদেরও স্ব স্ব উদ্যোগে এবং নিজ খরচে তা অপসারণ করতে হবে।
এ ছাড়া এ বিষয়ে সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাসহ বিভিন্ন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
উল্লেখিত সময়ের মধ্যে ইসির নির্দেশ প্রতিপালন করা না হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানিয়েছে ইসি।
সংসদ নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী প্রার্থীকে এ আদেশ প্রতিপালন না করার কারণে কারাদণ্ড এবং জরিমানা করার বিধান রয়েছে। আর ইসি চাইলে এই অপরাধের জন্য যে কারও প্রার্থিতা বাতিলেরও ক্ষমতা রাখে।
এমইউ/এমএমজেড/জেআইএম