রফতানিপণ্য চোর চক্রের চার সদস্য গ্রেফতার
চট্টগ্রামের একটি পোশাক কারখানা থেকে জাপানে রফতানির জন্য একটি কাভার্ডভ্যান থেকে বিপুল পরিমাণ রফতানিপণ্য চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগে কাভার্ডভ্যান চালকসহ চোরচক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে নগর পুলিশ। রোববার (১৮ নভেম্বর) হাটহাজারী উপজেলার ফতেয়াবাদ থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- হাটহাজারী উপজেলার ফতেয়াবাদ এলাকার প্রশান্ত মহাজনের বাড়ির বাসিন্দা কামাল হোসেনের মো. কাউছার হোসেন (৩০), হারুনুর রশিদের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন ওরফে সাজ্জাদ (২৬) , আবুল হোসেনের ছেলে শাহাদাৎ হোসেন (২৯) ও কাজী জাফর আহম্মদের ছেলে আনোয়ার হোসেন (২৯)।
সদরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নেজাম উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘গ্রেফতাররা পেশাদার চোরচক্রের সদস্য। তারা ট্রান্সপোর্ট প্রতিষ্ঠানের ড্রাইভারদের জোগসাজশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পণ্য পরিবহনের মাঝপথে মালামাল চুরি করে থাকে। গত সেপ্টেম্বর মাসে চট্টগ্রামের পোশাক রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান আদিলা অ্যাপারেলস তাদের উৎপাদিত ৬ হাজার ৭২০ পিস জ্যাকেট ২২৪টি কার্টনে করে জাপানে রফতানির উদ্দেশে সীতাকুণ্ডের পোর্টলিংক ডিপোতে পাঠানোর জন্য স্থানীয় একটি ট্রান্সপোর্ট প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেয়।’
‘রফতানির পরে জাপান থেকে জানানো হয় বাংলাদেশ থেকে পাঠানো আদিলা অ্যাপারেলস্’র ৬ হাজার ৭২০ পিস জ্যাকেটের মধ্যে ৩ হাজার ৯৮৬ পিচ জ্যাকেট তারা বুঝে পেয়েছেন। সে হিসাবে আরও ২ হাজার ৭৩৬ পিস জ্যাকেট কম, যার আনুমানিক মূল্য ১০ লাখ টাকা। এ সংবাদ পেয়ে আদিলা অ্যাপারেলস’র কমার্শিয়াল অফিসার মো. আনোয়ার হোসেন সদরঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন',- বলেন ওসি মো. নেজাম উদ্দিন।
সিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) এসএম মেহেদী হাসান বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পরপরই তৎপর হয় পুলিশ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ হাটহাজারী উপজেলার ফতেয়াবাদ এলাকা থেকে চোরচক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে এই চুরিকাণ্ডে মূল ভূমিকা পালনকারী সুমন পলাতক আছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘গ্রেফতাররা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন, তারা প্রায় দশ বছর ধরে এই চুরির কাজ করছেন। আদিলা অ্যাপারেলস’র এর মালামাল কাভার্ডভ্যনে করে নিয়ে যাওয়ার সময় তাদের নির্দিষ্ট ডিপোতে নিয়ে গিয়ে সুকৌশলে রফতানিপণ্যের কার্টনের সিলগালা ঠিক রেখে কসটেপ কেটে ২২৪ টি কার্টনের প্রতিটি থেকে চার-পাঁচটি করে জ্যাকেট বের করে নেয়। পরে আবারও সেসব কার্টন আগের মতোই কসটেপ দিয়ে মুড়ে দেয়, যা দেখে কেউ বুঝতে পারেনি মাঝপথে এতবড় চুরি হয়েছে।’
‘এটি একটি সংঘবদ্ধ চক্র। রফতানিপণ্যসহ দেশের বিভিন্ন পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রেই তারা এই চুরিকাণ্ড ঘটিয়ে থাকে। এ জন্য সারাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে তাদের নির্দিষ্ট ডিপো রয়েছে। এসব ডিপোতে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকার মালামাল চুরি করছে এই চক্র,’- সিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ)।
জেডএ/জেআইএম