প্রথমবারের মতো বিদ্যুতের আলোয় উদ্ভাসিত সন্দ্বীপ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:৪৩ এএম, ১৬ নভেম্বর ২০১৮

একবিংশ শতাব্দীর তথ্যপ্রযুক্তির এই জোয়ারেও দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন সন্দ্বীপ এখনও পায়নি সভ্যতার অন্যতম আবিষ্কার বিদ্যুৎয়ের ছোঁয়া। বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিল দ্বীপের চার লাখ মানুষ। অবশেষে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে সেই অধরা বিদুৎ পেতে যাচ্ছে সন্দ্বীপবাসী।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রথমবারের মতো ১৫ কিলোমিটার সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডের সাথে সংযুক্ত করা হয় সন্দ্বীপকে। এ ধরনের সাবমেরিন প্রকল্প দক্ষিণ এশিয়াতে প্রথম।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সন্দ্বীপের আবাসিক প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফরহাদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘গতকাল বিকেলে সন্দ্বীপে এনাম নাহার ৩৩/১১ কে.ভি সাব স্টেশনে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা হয়। কোনো প্রকার ত্রুটি ছাড়া বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমে ৩ হাজার গ্রাহক নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাবে। গ্রিড সংযোগের অধীনে বিতরণ সংস্থা ইতোমধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১৪০০টি বিদ্যুৎ সংযোগ সরবরাহ করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে দৈনিক ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করার ক্ষমতা রয়েছে। ২০১৯ সালে সন্দ্বীপে ১০০ শতাংশ বিদ্যুৎ সরবরাহের আশা করা যাচ্ছে। আগামী কয়েকদিন পরীক্ষামূলকভাবে এটি চালু থাকবে। এ মাসের যেকোনো একদিন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন।’

এদিকে প্রথমবারের মতো বিদ্যুতের আওতায় আসায় সন্দ্বীপের বাসিন্দারা আনন্দ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সন্দ্বীপের বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি বিতরণ করেছেন।

জানা যায়, ২০১৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর একনেকের সভায় প্রকল্পটি অনুমোদনের পর আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়া ও কার্যাদেশ সম্পন্ন হয়। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জেডটিটির মাধ্যমে ১৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর থেকে।

প্রথমে সন্দ্বীপের বাউরিয়া বেড়িবাঁধ থেকে মাটি খুঁড়ে ১০ ফুট নিচ থেকে ড্রেন করে টানা হয় সাবমেরিন ক্যাবল। ২১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় ওয়াটার জেটের সাহায্যে সন্দ্বীপ চ্যানেল নদীর তলায় মাটির ১০ থেকে ২০ ফুট গভীরে দুটি সাবমেরিন ক্যাবল বসানোর কাজ। জাতীয় গ্রিড থেকে ১১ কেভি (কিলো ভোল্ট) ক্ষমতাসম্পন্ন ৩টি তার সীতাকুণ্ডের বাকখালী সাবস্টেশনে আসে।

সাবস্টেশন থেকে ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে ৩৩ কেভি একত্রিত হয়ে একটি সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে নদীর তলদেশ দিয়ে বিদ্যুৎ এসে সংযুক্ত হয় বাউরিয়াঘাট এলাকায় স্থাপন করা ট্রান্সমিটারে। সেখান থেকে আবারো ১১ কেভি করে ভাগ হয়ে ৩টি তারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে এনাম নাহারের পশ্চিমের সাবস্টেশনে। ওই সাবস্টেশন থেকে সরবরাহ লাইনের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে পৌঁছবে জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ।

এনএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।