একাত্তর টিভির সিডি পর্যালোচনার পর সিদ্ধান্ত জানাবেন সুপ্রিমকোর্ট
একাত্তর টেলিভিশনের জমা দেওয়া অডিও ও ভিডিও সিডি এবং অন্যান্য তথ্য পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে চার বিচারপতির সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের বেঞ্চ মঙ্গলবার এ কথা বলেন। তবে কখন এ বিষয়ে আদেশ বা সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে সে বিষয়ে আপিল বিভাগ কিছু জানায়নি।
টেলিফোনে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে অন্য কোন ব্যক্তির কথপোকথন নিয়ে বেসরকারি টেলিভিশন একাত্তরে প্রচারিত সংবাদের অডিও ভিডিওসহ সিডি রোববার অ্যাটর্নি জেনারেল আপিল বিভাগে দাখিল করেন। সিডি দাখিলের পর আপিল বিভাগ বিষয়টি মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) কার্যতালিকায় আনার নির্দেশ দেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর চূড়ান্ত রায়ের আগে বিচারকদের কথিত ভূমিকা নিয়ে গত ১৬ জুলাই দৈনিক জনকণ্ঠে স্বদেশ রায়ের লেখা একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়।
‘সাকার পরিবারের তৎপরতা: পালাবার পথ কমে গেছে’ শিরোনামে ওই লেখায় আদালত অবমাননা হওয়ায় গত ১৩ অগাস্ট জনকণ্ঠ সম্পাদক আতিকউল্লাহ খান মাসুদ এবং নিবন্ধের লেখক স্বদেশ রায়কে সাজা দেয় সর্বোচ্চ আদালত।
রায়ের আগে আপিল বিভাগের বৃহত্তর বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানির সময় জনকণ্ঠের আইনজীবী একটি অডিও রেকর্ডের শ্রুতিলিখন উপস্থাপন শুরু করেন, যা বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলা এবং মওদুদ আহমদের বাড়ি নিয়ে মামলার বিষয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে অন্য এক বিচারকের কথোপকথন বলে আইনজীবীর দাবি।
একাত্তর টেলিভিশন ১০ অগাস্ট অবমাননা মামলা নিয়ে তাদের প্রতিবেদনে ওই অডিও টেপ সম্প্রচার করে। রাতে তাদের সংবাদ বিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠান ‘একাত্তর জার্নাল’- এ ওই টেপের বিষয়ে আলোচনাও হয়।
ওই অনুষ্ঠান নজরে আসায় পরদিন আদালত অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদুল ইসলামের মতামত শোনে। এরপর একাত্তর টেলিভিশনকে ১৬ অগাস্টের মধ্যে ভিডিও ও অডিও টেপ জমা দিতে বলা হয়।
গত রোববার ওই ভিডিও-অডিও সিডি সংবলিত খাম আদালতে জমা দেওয়ার পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, সেদিন (১০ অগাস্ট) বিকেলে তারা (একাত্তর) লিড নিউজ করেছে এই খবরটা। যেই সিডিটা আদালতে বাজাতে দেওয়া হয়নি, সেটাকেই তারা সম্প্রচার করেছে এবং টকশোতেও এসব সম্পর্কে আলাপ-আলোচনা করেছেন।
“স্বাভাবিকভাবেই বিচারাধীন কোনো বিষয়ে কোনো রকম সম্প্রচার করা বা আলাপ-আলোচনা করা বা অভিমত ব্যক্ত করা এটা সঠিক না। এটা আদালতকে প্রভাবিত করার সামিল বলে আদালত সব সময় গণ্য করেন। সেজন্যই তাদের সম্প্রচারের সিডিটা চেয়ে পাঠিয়েছিলেন এবং এটা আদালত দেখবেন, দেখে পরবর্তী সময়ে আদেশে দেবেন।”
তার আগে দৈনিক জনকন্ঠের সম্পাদক আতিকউল্লাহ খান মাসুদ ও নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায়ের বিরুদ্ধে গত ১৩ আগস্ট দণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। রায়ে তাদের প্রতিজনকে ১০হাজার করে মোট ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং আপিল বিভাগের কার্যক্রম চলা পর্যন্ত রায় ঘোষণার পর থেকে বেলা সোয়া একটা পর্যন্তু আদালতে অবস্থানের দণ্ড দেয়া হয়।
এফএইচ/এআরএস/পিআর