অসহযোগিতার কারণে মামলা যথাসময়ে নিষ্পত্তি হয় না : প্রধান বিচারপতি


প্রকাশিত: ০৯:৫৬ পিএম, ১৭ আগস্ট ২০১৫

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, সিরাজগঞ্জে ২৬ শতাংশ মামলার নিষ্পত্তি করা হয়েছে। যা আশানুরূপ নয়, আগামী ছয় মাসের মধ্যে জেলার পুরাতন মামলার ৫০ শতাংশ নিষ্পত্তি করতে হবে। বিচার বিভাগের সারাদেশে যে ৩০ লাখের অধিক যে মামলা রয়েছে, তা নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে না যদি না বিজ্ঞ আইনজীবীরা সহযোগিতা না করেন।

বিচারকে তরান্বিত করার জন্য তিনি আইনজীবীদের অধিক সহায়তা প্রদানের জন্য আহ্বান জানান। বিচার কাজের দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি হচ্ছে কারণ, সময় মতো সাক্ষী আদালতে হাজির হন না। সাক্ষীদের সময় মতো হাজির করার জন্য তিনি জেলার সকল থানার পুলিশ অফিসারদের প্রতি আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে যে সকল পুলিশ অফিসার বদলি হয়ে অন্য জেলায় গেছেন, তাদের মধ্যে অনেককেই জেলা পিপি চেনেন, যে কারণে তাকে হাজির না করিয়ে, পুরাতন অন্য পুলিশ অফিসার দিয়ে সাক্ষী প্রদান করা হলে, মামলা তাড়াতাড়ি নিষ্পত্তি হবে।

বিচারপতি আরো বলেন, মামলা নিষ্পত্তিতে বড় বাধা হলো ময়নাতদন্ত রিপোর্ট। লাশ কাটা ঘরে ডাক্তার বা বিশেষজ্ঞরা যান না। ডোম লাশ কেটে যা বলে, ডাক্তাররা তাতেই সই করে দেন। ফলে সেই রিপোর্টের সঙ্গে পুলিশের তদন্তের মিল পড়ে না। যে কারণে মামলা নিষ্পত্তিতে বিঘ্ন হচ্ছে।

সোমবার বিকেলে সিরাজগঞ্জ সার্কিট হাউস মিলনায়তনে স্থানীয় বিচার বিভাগ আয়োজিত জুডিশিয়াল কনফারেন্স ২০১৫’তে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। জেলা ও দায়রা জজ জাফরোল হাছানের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক বিল­াল হোসেন, জেলা বারের সভাপতি নুরুল আমিন।

অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ নজরুল ইসলামের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে বিচার বিভাগের রেজিস্ট্রা সৈয়দ আমিনুল ইসলাম, জেলা পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহমেদ, জেলা সিভিল সার্জন দেবব্রত রায়, জেলায় কর্মরত বিচারক, অতিরিক্ত বিচারক, ম্যাজিস্ট্রেটসহ বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তারা কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, জেলায় দুই সিফটে বিচারকরা দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু বিচার কাজ তরাম্বিত হচ্ছে না। বিচারকদের চেষ্টা থাকলেও সাক্ষী ও আইনজীবীদের অনুপস্থিতির কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বিচারকাজ করতে যে সকল সুযোগ সুবিধা প্রয়োজন হবে তা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইতিমধ্যে দেশের প্রতিটি জেলায় মহিলাদের জন্য আদালত প্রাঙ্গনে বিশ্রামাগারসহ গণসৌচাগার তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বিচারকসহ সকলকে একযোগে কাজ করে বিচার কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার আহ্বান জানান।

এদিকে অন্য বক্তারা বলেন, সিরাজগঞ্জ আদালতে ছয়টি মূল এজলাস, পাঁচটি অস্থায়ী এজলাসে মামলা পরিচালনা করা হচ্ছে। যা প্রযোজনের তুলনায় অপ্রতুল। একই সঙ্গে গত জানুয়ারি থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ১৫শ ৩০টি মামলার নিস্পত্তি করা হয়েছে।

জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে জেলায় ৩১ জুলাই পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালতে দুই হাজার ১৫টি মামলা নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এ সকল মামলায় ৫১০ জনকে কারাদণ্ড ও ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বাদল ভৌমিক/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।