রাজন হত্যা : চার্জশিটের শুনানি ২৪ আগস্ট
শিশু শেখ সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলার চার্জশিটের শুনানির তারিখ আগামী ২৪ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। সোমবার সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ফারহানা ইয়াসমিন এ তারিখ নির্ধারণ করেন। সিলেটের পিপি (পাবলিক প্রসিকিউটর) অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিলেট কোর্টের জি আর (জেনারেল রেজিস্ট্রার) ফরিদ উদ্দিন বলেন, আদালত এ মামলার নথি পর্যালোচনা করছেন। পর্যালোচনা শেষে ২৪ আগস্ট চার্জশিটের ওপর শুনানি এবং ওই দিন চার্জশিট গ্রহণ করা হবে।
শিশু শেখ সামিউল আলম রাজনকে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা এবং নির্যাতনের দৃশ্য ধারণ করে ভিডিও
ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় গত রোববার সন্ধ্যায় ১৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করে ডিবি পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ইন্সপেক্টর সুরঞ্জিত তালুকদার মহানগর হাকিম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। রাজন হত্যার এক মাস আট দিনের মাথায় দাখিল করা হয় এ চার্জশিট। এতে সৌদি আরবে আটক কামরুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে তাকে পলাতক দেখানো হয়েছে। চার পৃষ্ঠার এ চার্জশিটে মোট ৩৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
সিলেটে মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ পুলিশ-কমিশনার (মিডিয়া) রহমত উল্যাহ জানান, সৌদি পুলিশের হাতে আটক প্রধান আসামি কামরুল ইসলামকে ওয়ারেন্ট অব অ্যারেস্ট (গ্রেফতারি পরোয়ানা) দেখিয়ে তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
পাশাপাশি তার অপর দুই সহোদর শামীম ও পাভেলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে তাদের বিরুদ্ধে হুলিয়া এবং মালামাল ক্রোকের বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। কামরুলের ক্ষেত্রেও চাওয়া হয়েছে একই নির্দেশনা।
প্রসঙ্গত, ৮ জুলাই বুধবার সকালে চোর সন্দেহে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয় ১৩ বছরের শিশু রাজনকে। নির্যাতনকারীরাই শিশুটিকে পেটানোর ভিডিও ধারণ করে এবং তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেন। ২৮ মিনিটের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
কুমারগাঁও এলাকার একটি গ্যারেজে ওই হত্যাকাণ্ডের পর ওই দিন বেলা পৌনে ২টার দিকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে রাজনের লাশ নিয়ে যাওয়ার সময় মুহিত আলমকে ধরে পুলিশে দেয় স্থানীয় লোকজন। ৮ জুলাই রাতে জালালাবাদ থানার এসআই আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় মুহিত আলম, তার ভাই কামরুল ইসলাম (২৪), তাদের সহযোগী আলী হায়দার ওরফে আলী (৩৪) ও চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়নাকে (৪৫) আসামি করা হয়। পরে রাজনের বাবা এ ঘটনায় থানায় আরেকটি এজাহার দেন। প্রথমে জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেন মামলাটি তদন্ত করেন।
গত ১৬ জুলাই মামলাটি মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে হস্তান্তর হয়। ডিবির ইন্সপেক্টর সুরঞ্জিত তালুকদার মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান। দীর্ঘ প্রায় এক মাস তদন্ত শেষে তিনি আদালতে মামলার চার্জশিট দাখিল করেন।
ছামির মাহমুদ/এআরএ/এমআরআই