গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকলে উন্নয়নও থাকবে : প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৮:৫৫ পিএম, ০৬ নভেম্বর ২০১৮

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকলে দেশে উন্নয়নও অব্যাহত থাকবে। অামরা ১০ বছরে যে উন্নয়ন করেছি- সে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি বলেন, দেশের জনগণ চায় না যুদ্ধাপরাধীরা ক্ষমতায় অাসুক। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী কেউ তা চাইবে না।

মঙ্গলবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে চলমান সংলাপের অংশ হিসেবে ১৪ দলের সঙ্গে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সংলাপ চলাকালে সূচনা বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

সংলাপের শুরুতে সবাইকে স্বাগত জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা এবং সেই অবস্থা থেকে বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরিয়ে আনা এটাই ছিল আমাদের লক্ষ্য। সবচেয়ে বড় কথা ছিল দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি করা।

তিনি আরও বলেন, একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেভাবে দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে ঠিক একই কায়দায় ২০০১ সালে নির্বাচনের পর অত্যাচার নির্যাতন করা হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর। যে ক্ষমতায় আসে সেই বসে যেতে চায়। খালেদা জিয়া ১২টা মামলা দিয়েছিল সরকারে এসে। আবার দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসে আরও ৫/৬টি মামলা দেয় আমার বিরুদ্ধে।

শেখ হাসিনা বলেন, ১/১১ সরকার শেখ হাসিনাকে ইলেকশন না করার প্রস্তাব দিয়েছিল। বিনিময়ে একটি মর্যাদা দেয়ার প্রস্তাব দেয় তারা। কিন্তু আমি, একটি কথা জোর দিয়ে বলেছি, নির্বাচন হবে জনগণ যাকে চাইবে সেই ক্ষমতায় আসবে।

২০০১ সালে আমরা যেখানে বাংলাদেশ রেখে এসেছিলাম সেখান থেকে বাংলাদেশ আবার পিছিয়ে যায়। ২০০৮ সালে যখন সরকার গঠন করি তখন বিশ্বমন্দা থাকে। এর মধ্য দিয়ে আমরা এগিয়ে যাই। ২০১৩ সাল থেকেই নির্বাচন ঠেকানোর নামে অগ্নিসংযোগসহ নানা নাশকতা করা শুরু করে। ২০০৯-১৮ সাল পর্যন্ত আপনারা যদি বাংলাদেশের উন্নয়নের চিত্রটা দেখেন তাহলে নিশ্চয়ই এটা স্বীকার করতে বাধ্য হবেন যে আমরা উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছি বলে জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফিরিয়ে আনা এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার মতো কঠিন কাজটা এই সময়ের মধ্যে আমরা করতে পেরেছি। কারণ জনগণের সমর্থন ছিল বলেই যুদ্ধাপরাধের বিচার করার পাশাপাশি রায়ও কার্যকর করতে সক্ষম হয়েছে সরকার। এ কারণে বাংলাদেশের উন্নয়ন হচ্ছে যে কারণে আমাদের বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হার ৭.৮।

তিনি বলেন, আমরা যে উন্নয়নটা করতে পেরেছি গণতান্ত্রিক ধারা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে উন্নত অব্যাহত থাকবে। স্বাধীনতাবিরোধী এবং যুদ্ধাপরাধী যাদের সাজা দিয়েছি এবং কার্যকর করেছি তারা আবার ক্ষমতায় আসুক বাংলাদেশের জনগণও চায় না, আমরাও চাই না। যারা স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করে যুদ্ধাপরাধীরা ক্ষমতায় আসুক তারাও সেটা চাইবে না।

মঙ্গলবারের সংলাপে অংশ নিতে যাওয়া ১৬ বাম নেতা হলেন : বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক ও পলিট ব্যুরো সদস্য হায়দার আকবর খান, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় পরিচালনা কমিটির সদস্য শুভ্রাংশু চক্রবর্তী ও আলমগীর হোসেন দুলাল।

এছাড়া আরও রয়েছেন : গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি ও রাজনৈতিক পরিষদ সদস্য ফিরোজ আহমেদ, বাংলাদেশ ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন নান্নু ও সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মমিনুর রহমান বিশাল, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রনজিৎ কুমার।

এফএইচএস/জেএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।