সব স্রোত মিলেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:২৬ এএম, ০৪ নভেম্বর ২০১৮

গায়ে পাঞ্জাবি-পায়জামা, মাথায় টুপি। সরাদেশ থেকে এভাবেই দলে দলে ছুটে আসছেন আলেমরা। আলেমদের সমাগমে সৃষ্টি হয়েছে জনস্রোত। আর সব জনস্রোত গিয়ে মিলছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দিতে আল হাইয়াতুল উলয়া লিল জামিয়াতুল কাওমিয়া বাংলাদেশের ‘শোকরানা মাহফিলে’ রোববার (৪ নভেম্বর) ফজরের নামাজের পর থেকেই আলেমরা আসতে শুরু করেছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে জনস্রোত। সকাল ৯টার মধ্যেই অনেকটা জনসমুদ্রে পরিণত হয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।

Assembly

জাতীয় দ্বীনি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড, বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান শাইখুল হাদিস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ আগেই ঘোষণা দিয়েছেন শুকরানা মাহফিলে ১০ লাখেরও বেশি মানুষের জন্য প্রস্তুতি রয়েছে।

কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির স্বীকৃতি দিয়ে সংসদে আইন পাস হওয়ায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ ‘শুকরানা মাহফিল’ আয়োজন করেছে কওমি মাদরাসাগুলোর ছয় বোর্ডের সমন্বিত সংস্থা আল-হাইয়াতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়্যাহ বাংলাদেশ।

শুকরানা মাহফিলের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফি।

Assembly

কওমি মাদরাসাগুলোর ছয় বোর্ডের সমন্বিত সংস্থা আল-হাইয়াতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়্যাহ বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেয়া হবে।

গাজিপুর থেকে আসা মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির স্বীকৃতি দিয়েছেন। এটা আমাদের জন্য বিরাট পাওয়া। এ জন্য আমরা শুকরানা আদায় করতে জমায়েত হয়েছি। প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দিতে পারাও আমাদের জন্য বিরাট পাওয়া।

Assembly

রাজধানীর যাত্রাবাড়ির একটি মাদরাসা থেকে আসা মো. আয়ুব হোসেন বলেন, দাওরায়ে হাদিসের সনদকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির স্বীকৃতি দেয়ায় আমরা খুব খুশি। এ জন্য এখানে এসেছি। প্রধানমন্ত্রী আমাদের যে উপহার দিয়েছেন, সে তুলনায় প্রধামন্ত্রীকে দেয়া এ সংবর্ধনা কিছুই না।

ঝিনাইদহ থেকে আসা মো. মাহবুব বলেন, হেফাজতে ইসলাম যখন শাপলা চত্বরে সমাবেশ করেছিল, সে সময় এটা নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের নানা চেষ্টা হয়েছিল। একদল বিভ্রান্ত হয়ে ভাঙচুর করেছিল। আমিও সে দিন শাপলা চত্বরের সমাবেশে এসেছিলাম। তবে সেদিনের পরিস্থিতি আর আজকের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন।

Assembly

তিনি বলেন, শাপলা চত্বরের মাহসমাবেশের সময় গুজব ছড়ানো হয়েছিল বর্তমান সরকার ইসলাম বিরোধী। অথচ সেই সরকারই আজ কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির স্বীকৃতি দিয়ে আমাদের সম্মানিত করেছেন। এটা আমাদের জন্য বিরাট পাওয়া। সেই সঙ্গে এটাও প্রমাণিত হলো এ সরকার ইসলাম বিরোধী নয় বরং ইসলামের পক্ষে।

এদিকে শোকরানা মাহফিলের বিষয়ে আল্লামা মাসঊদ বলেন, ‘এটি নির্বাচনী সমাবেশ নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কওমি মাদরাসার জন্য নজীরবিহীন একটি কাজ করেছেন। যা ইতোপূর্বে কেউই করেনি। আমরা তাকে শুকরিয়া জানাতেই একত্র হবো।’

Assembly

এক সময় সরকারের বিরুদ্ধে শাপলা চত্বরে অবস্থান নেয়া হেফাজতে ইসলাম এখন পক্ষে আসার বিষয়ে আল্লামা মাসঊদ বলেন, ‘হেফাজতে ইসলাম সরকারের বিরুদ্ধে ছিল না। শাপলা চত্বরে আমাদের দাবি সরকারের কাছে পেশ করেছিল। আর এখন তো অনেক বড় একটি কাজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করে দিয়েছেন। কওমি মাদরাসা স্বীকৃতি প্রদান, আইন পাস করানো ছোট কোনো বিষয় নয়। এটা নজীরবিহীন।’

এমএএস/এএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।