যাত্রীদের ৪৮ ঘণ্টা জিম্মির পর সড়কে বাস
দাবি আদায়ে দেশবাসীকে ৪৮ ঘণ্টা জিম্মি করে অবশেষে সড়কে নেমেছে গণপরিবহন। মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাজধানীর সব রুটে বাস চলছে। গত দুই দিন ধর্মঘটের কারণে রাজধানীর সব বাসস্ট্যান্ডে অফিসগামীদের প্রচণ্ড ভিড় দেখা গেলেও মঙ্গলবার এই সংখ্যা ছিল অনেক কম।
এর আগে সড়ক পরিবহন আইনের কয়েকটি ধারা সংশোধন ও উত্থাপিত ৮ দফা দাবি আদায়ে শ্রমিকরা গত রোববার সকাল থেকে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট পালন শুরু করে। এ অবস্থায় সংখ্যায় কম হলেও সোমবার রাত থেকেই রাজধানীতে গণপরিবহন চলা শুরু হয়েছে।
সরেজমিনে রাজধানীর কাকরাইল ও মালিবাগ সড়কে সব রুটের বাস চলাচল করতে দেখা যায়। মঙ্গলবার ভোর থেকেই এই সড়কে কমলাপুর-নতুন বাজার রুটের ৬ (সি) নম্বর বাস, সদরঘাট-গাজীপুর রুটের সু-প্রভাত, আকাশ সু-প্রভাত, ভিক্টর পরিবহন, মাওয়া ঘাট থেকে গুলিস্তান-মালিবাগ-আবদুল্লাহপুর রুটের প্রচেষ্টা পরিবহনের বিপুল সংখ্যক বাস চলতে দেখা যায় এই সড়কে।
এছাড়া রামপুরা সড়কে রাইদা, তুরাগ, গ্রেট তুরাগ, জে এম সিটিং, নূরে মক্কা ও দেশ বাংলা পরিবহণের বাস চলতে দেখা যায়। ঘনঘন স্টপেজ থাকার কারণে প্রতিদিনের মতো এই সড়কে কিছুটা ধীরগতিতে যানচলাচল করেছে।
অপরদিকে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে গিয়ে মিরপুর ১২-সদরঘাট রুটের ১ নম্বর বাস, যাত্রাবাড়ী-পল্লবী রুটের ১/ই নম্বর বাস, ফুলবাড়িয়া-আবদুল্লাহপুর রুটের ৩ নম্বর বাসসহ এই রুটের প্রায় সব বাসই চলতে দেখা যায়। প্রতিদিনের মতো শাহবাগ চত্বরে যাত্রীদের বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়।
সদরঘাট থেকে গাবতলী রুটের ৮ নম্বর বাসের চালক মশিউর রহমান বলেন, সোমবার রাত থেকেই আমরা গাড়ি চালানো শুরু করি। আমরা যাত্রীদের কষ্ট দিতে চাই না। বাস না থাকলে যাত্রীদের যেমন কষ্ট হয়, তেমনি আমাদেরও কষ্ট হয়। আমরা দিন আনি দিন খাই। বাস না চললে আমাদের কোনো রোজগার হয় না। কিন্তু শ্রমিক হিসেবে আমাদেরকে সংগঠনের সিদ্ধান্ত মেনেই কাজ করতে হয়। অনেকে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সড়কে বাস নামাতে পারেনি। আশা করি সরকার আমাদের দাবি মেনে নেবেন।
নাবিল হাসনাত নামে এক যাত্রী জাগো নিউজকে বলেন, চালকরা যাত্রীদের জিম্মি করে ২ দিন ধর্মঘট করে আমাদের কষ্ট দিয়েছে। শিক্ষার্থীরাও আন্দোলন করেছিল, তাদের সঙ্গে জনসমর্থন ছিল। কিন্তু আজ সড়কে এতো বাস, এতেই প্রমাণ হয় জনসমর্থন না থাকলে কোনো আন্দোলনই সফল হয় না।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী জাগো নিউজকে বলেন, এই দাবিগুলো শ্রমিকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন-কর্মসূচি চলবে। তবে দুই দিনের ধর্মঘটের পর আমাদের দাবি মেনে নিতে সরকারকে আমরা ২১ দিন সময় দিয়েছি। এর মধ্যে কোনো অগ্রগতি না হলে আবারও ধর্মঘটে যাবে ফেডারেশন।
এআর/এমএমজেড/জেআইএম