এ গাছের ছাল, ও গাছের বাকল মিলে জোট : প্রধানমন্ত্রী
ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এই যে, এ গাছের ছাল, ও গাছের বাকল সবমিলে যে একটা তৈরি হয়েছে। যাই হোক তারা ভালো কাজ করুক, আমি এটাই চায়। আওয়ামী লীগ এটা নিয়ে কোনোদিন দুঃশ্চিন্তা করে না। এরা একতাবদ্ধ হয়েছে, এটা ভালো। এখানে স্বাধীনতাবিরোধী আছে, জাতির পিতার হত্যাকারীদের মদদদাতা আছে, এমনকি যারা বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ- সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে, দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, তারা এক জায়গায় হয়েছে।'
সৌদি আরব সফর সম্পর্কে সোমবার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে এসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
‘রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, সেটাকে আমি স্বাগত জানায়। কারণ এটার প্রয়োজন আছে। আমরা মনে করি, তারা সবাই যদি ঐক্যবদ্ধ হতে পারে, আর যদি সেটা রাজনৈতিকভাবে সফল হতে পারে, তাহলে সমস্যা কোথায়,’- বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, তবে একটু লক্ষ্য রাখা দরকার কারা কারা এক হলো, সেটাও দেখতে হবে। যারা সেখানে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে তারা কে কোন ধরনের, কে কোন চরিত্রের, কার কী ধরনের ভূমিকা, কী ধরনের বাচনভঙ্গি, এমনকি মেয়েদের প্রতি কী ধরনের কটূক্তি করতে পারে, সে প্রতিযোগিতাও আপনারা দেখতে পেরেছেন।
'বাংলাদেশের মানুষ কী বলে সেটাই বড় কথা। জোটের এমন এমন সদস্য, আপনাদের সাংবাদিক মহিলাকে যেভাবে নোংরা কথা বলতে পারে, তারা সব এক। এমন একটা জোট হওয়া তো আমরা খারাপ কিছু দেখছি না। তারা রাজনৈতিভাবে জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করুক। কারণ, এরাই তো ইমারজেন্সি ডিক্লিয়ারসহ আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের সবই করেছে',- বলেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এর মধ্যে (ঐক্যফ্রন্ট) অনেকেই তো আমাদের আওয়ামী লীগে ছিল একসময়। আওয়ামী লীগ থেকে এখন দূরে সরে গিয়ে তারা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জোট তৈরি করেছে। রাজনীতিতে এ স্বাধীনতা সবারই আছে। রাজনীতি করার অধিকারও সবার আছে। একটি গণতান্ত্রিক ধারা প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশে। সেই গণতান্ত্রিক ধারায় স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে রাজনৈতিক স্বাধীনতা রয়েছে। কথা বলার স্বাধীনতা রয়েছে। সাংবাদিকতার স্বাধীনতা আছে। আমাদের বিচারবিভাগ স্বাধীন, সবদিক দিয়ে স্বাধীন। অন্তত এটুকু দাবি করতে পারি, ১৯৭৫ সালের পর, বর্তমান বাংলাদেশে আমাদের সাংবাদিক বলেন, আদালত বলেন, সর্বক্ষেত্রে মানুষ স্বাধীনতা ভোগ করছে।
ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা দাবি সম্পর্কিত এক প্রশ্নের উত্তরে সরকারপ্রধান বলেন, তাদের দাবি ৪ দফা থেকে বেড়ে ৭ দফা হয়েছে। আমি অপেক্ষা করে আছি, দফাটা আরও কতো দূর যায়, তারপর আমি আমার বক্তব্য দেব।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে কাজ করি। আর্থসামাজিক যে উন্নয়ন আমরা করেছি, সেটাকে ধরে রাখতে হবে। পাশাপাশি আমরা একটা ডেল্টাপ্লান দিয়েছি। ২১০০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে কেমন দেখতে চাই, সে পরিকল্পনা আমরা প্রণয়ন করেছি, আমরা তা বাস্তবায়ন করে যাবো।
তিনি আরও বলেন, আগামী নির্বাচনে আমাদের লক্ষ্য থাকবে, আমাদের সরকারের যদি ধারাবাহিকতা থাকে, জনগণ যদি নৌকা মার্কায় ভোট দেন, তাহলে আমরা ক্ষমতায় আসব। আমরা ক্ষমতায় আসলে উন্নয়নের গতিধারাটা অব্যাহত থাকবে।
এমএএস/জেডএ/এমএস