জাবিতে এতিম শ্রমিককে পেটালেন ছাত্রলীগ কর্মী
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মীর মোশাররফ হোসেন হলে ইয়াছিন (১৫) নামের এতিম এক ক্যান্টিন বয়কে পিটিয়েছে ওই হলের এক ছাত্রলীগ কর্মী। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় হলের বি-ব্লকের ক্যান্টিনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দর্শন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের (৪১ তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী দেবাশীষ মিত্র ইয়াসিনকে নাস্তা দিতে বলেন। তবে পর্যায়ক্রমে নাস্তা দেয়ায় কয়েক মিনিট দেরি হয়। এতে তিনি ক্ষুদ্ধ হয়ে ইয়াসিনকে মারতে শুরু করেন। মারধরের সময় এতিম ইয়াসিন -‘ভাই, ভুল হয়েছে গেছে, স্যরি ভাই এখনি দিচ্ছি...’ বলে কাকুতি মিনতি করতে থাকে।
ক্যান্টিন মালিক মোহাম্মদ মামুন ইয়াসিনকে রক্ষার জন্য এগিয়ে গেলে তাকেও থাপ্পড় মারতে শুরু করেন দেবাশীষ। উপস্থিত শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলে দেবাশীষ ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ক্যান্টিনে ফাও খাওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
এ বিষয়ে ক্যান্টিন মালিক মো. মামুন বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতারা প্রতিদিন খাবার খেয়ে বিল না দিলে চলে গেলেও আমরা কিছু বলি না। গরিব-অসহায় হওয়াতে এসবের প্রতিবাদ করতে যাই না। ছেলেটি এতিম বলে আমি তাকে চাঁদপুর থেকে নিয়ে এসেছি। এতিমদের উপর এমন অত্যাচার আল্লাহ সহ্য করবে না।’
এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা দেবাশীষ মিত্র বলেন, ‘অনেক দিন থেকে ও এ রকম নাস্তা দিতে দেরি করে। আমি জানতাম না ও কানে কম শোনে। নাস্তা দিতে দেরি হওয়াতে ওদের মারা হয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হলের সাধারণ সম্পাদক আসফিক বলেন, ‘এটা একটা তুচ্ছ ঘটনা। আর এর সঙ্গে ছাত্রলীগের কোনো সম্পর্ক নেই।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্ট ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবো।’
উল্লেখ্য, এর আগে প্লাস্টিকের প্লেটে খাবার দেয়ার অভিযোগে মীর মোশাররফ হোসেন হলের ক্যান্টিন মালিক কামালকে বেড়ধক মারধর করেন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল হোসেন দ্বীপু। পরবর্তীতে কামাল হলের বি-ব্লকের ক্যান্টিনটি ছেড়ে দেয়।
হাফিজুর রহমান/এসএইচএস/বিএ