কুক ক্লিনার গাড়িচালক পরিচালক কেউই বাদ যাননি


প্রকাশিত: ১০:২৭ এএম, ১৫ আগস্ট ২০১৫
ফাইল ছবি

হজ মেডিকেল টিমের সহায়তাকারী সদস্যরা সৌদি আরবে গিয়ে হাজিদের সেবা করেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। ডাক্তার ও নার্সদের সহায়তা করতে তাদের সৌদি আরব পাঠানো হলেও সেখানে গিয়ে কাজের কথা তারা বেমালুম ভুলে যান। অধিকাংশ সদস্যই নিজেদের মন্ত্রী, সচিবসহ সরকারের নীতি-নির্ধারকদের কাছের মানুষ পরিচয় দিয়ে বেশিরভাগ সময় অর্পিত দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করেন।
 
চলতি বছর ধর্মমন্ত্রণালয় ২৭৩ সদস্যের মেডিকেল টিম ঘোষণা করেছে। ৮১ জনের নাম সহায়তাকারী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হলেও তারমধ্যে একমাত্র প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে গাইবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক মোক্তার হোসেন সুযোগ পেয়েছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সহায়তাকারী হিসেবে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব, অতিরিক্ত সচিবসহ শীর্ষ কর্তাব্যক্তিদের বাসভবন ও কার্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী- কুক, ক্লিনার, জমাদার, মালি, গ্যানম্যান, গাড়িচালক, অফিস সহায়ক, ফটোকপি অপারেটর, ডেসপাস রাইটার, অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর, এলডি কাম টাইপিস্ট, খাদেম, মুয়াজ্জিন, পুলিশের এএসআই, অ্যাকাউনটেন্ট, মাস্টার ট্রেইনার, ওয়াকফ ইন্সপেক্টর, পার্সোনাল অফিসার, সহকারী পরিচালক ও উপ-পরিচালকের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সিনিয়র চিকিৎসক ও নার্স যারা ইতোপূর্বে মেডিকেল টিমের সদস্য হিসেবে সৌদি আরবে হজে গিয়েছেন তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ডাক্তার ও নার্সদের সহায়তা করার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের মাঠ পর্যায়ের হাতে কলমে রোগীর সেবা করার পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত। বর্তমানে যে সকল প্রভাবশালী লোকদের অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে তারা সৌদি আরবে গিয়ে চিকিৎসাসেবা তো দেনইনা উল্টো অবস্থাদৃষ্টিতে মনে হয় তাদেরকেই সেবা দিতে হবে।  

তারা বলেন, ভাবতেই অবাক লাগে একজন উপ-পরিচালক কিভাবে এ টিমের সদস্য হন! খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, মেডিকেল টিমে ডাক্তার, নার্স ও সহায়তাকারীর নাম অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে গত কয়েকদিন যাবৎ ধর্মমন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে রশি টানাটানি চলছে। প্রথম পর্যায়ে গত ২৬ জুলাই ২শ’ ডাক্তার, নার্স, ফার্মাসিস্ট ও সহায়তাকারীর নাম অন্তর্ভুক্ত করে মেডিকেল টিমের সদস্যদের নাম প্রকাশ করা হয়। পরবর্তীতে চাপের মুখে এ সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করে ২৭৩ জন করা হয়।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নির্বাচিত ৪০ ডাক্তার, নার্স ও ফার্মাসিস্টকে ওই টিমে যোগদান না করে স্ব স্ব কর্মস্থলে ফেরত যাওয়ার নির্দেশনা জারি করে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, তাদের অনেকেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অমান্য করে হজে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে কয়েকজন প্রথমেই হজ মেডিকেল টিমের সদস্য হয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে চলতি বছর লক্ষাধিক হজযাত্রী সৌদি আরব যাচ্ছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হজ কার্যক্রম পরিচালনার সাথে জড়িত একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, হজ মেডিকেল টিমে প্রশিক্ষিত সহায়তাকারী পাঠানো উচিত। বর্তমানে নামকাওয়াস্তে সহায়তাকারীর নামে অপ্রশিক্ষিতদের হজে পাঠানো হচ্ছে বলে তারা মন্তব্য করেন।

এমইউ/এসকেডি/এসএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।