৮ হাসপাতালের রোগ নির্ণয় ব্যবস্থা উন্নয়নে জাইকার সঙ্গে চুক্তি
দেশের আট বিভাগীয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগ নির্ণয় ব্যবস্থা (ডায়াগনস্টিক এবং ইমেজিং সিস্টেম) উন্নয়নে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে সরকার।
রোববার সচিবালয়ে প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান ও জাইকার পক্ষে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান জাপানের ওরিয়েন্টাল কনসালটেন্টস গ্লোবাল কোম্পানি লিমিটেডের ঢাকা লিঁয়াজো অফিসের জেনারেল ম্যানেজার রোহিলি ইশি চুক্তিতে সই করেন। এ সময় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন (কম্পোনেন্ট-২: দেশের আটটি বিভাগীয় মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডায়াগনস্টিক ও ইমেজিং ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় জাইকা ঢাকা, রাজশাহী, ময়মনিসংহ, সিলেট, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল এবং রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডায়াগনস্টিক ও ইমেজিং সিস্টেম উন্নয়ন করে দেবে।’
তিনি বলেন, ‘জাইকা বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে উন্নয়ন ও অর্থায়ন করে থাকে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়েও অনেক প্রকল্পে কাজ করছে। এই প্রকল্প একনেকে পাস হয়েছে। এরপরে বিভিন্ন পর্যায় পার করে চুক্তি সইয়ের পর্যায়ে এসেছে। এই প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৯০০ কোটি টাকা। এরমধ্যে মোট জিওবি অংশ ১৯৭ কোটি টাকা এবং জাইকা দেবে ৭০৩ কোটি টাকা।’
ইমেজিং সিস্টেমের মধ্যে রয়েছে সিটি স্ক্যান, এমআরআই, ফ্যাক্স, মেমোগ্রাম, এনজিওগ্রাম, আলট্রাসনো, ক্লোনোস্কপি, গ্যাস্ট্রস্কপি রয়েছে বলে জানান জাহিদ মালেক।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘জাপান এই যন্ত্রপাতিগুলো আমাদের হাসপাতালে বসাবে। এতে হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থার আরও উন্নত হবে।’
আধুনিক চিকিৎসার জন্য সিটি স্ক্যান, এমআরআই যন্ত্র ছাড়া ভালো চিকিৎসা করা যায় না জানিয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এনজিওগ্রাম ছাড়া হার্টের চিকিৎসা করা সম্ভব হয় না। আপনারা জানেন এদেশে অনেক অসুখ হচ্ছে। সে অসুখগুলোর চিকিৎসার জন্য এ সমস্ত যন্ত্র দরকার। যে কনসালটেন্ট নিয়োগ হচ্ছে, সেই কনসালটেন্ট বিভিন্ন রকমের সাহায্য দেবে প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করার জন্য। তারা নকশা প্রণয়ন করে দেবে, যন্ত্রপাতির দরপত্র আহ্বান করবে এবং নির্মাণ তদারকি করবে।’
‘প্রত্যেকটি মেডিকেল কলেজে এই যন্ত্রপাতি রাখার জন্য একটি করে চারতলা ভবন তৈরি করা হবে। সেই ভবনে এই যন্ত্রপাতি সেট করা হবে। যন্ত্রপাতি ক্রয় ও সংগ্রহের জন্য তারা সাহায্য করবে। যারা পরিচালনা করবে তাদের প্রশিক্ষণ দেবে জাইকা।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেল কলেজে পুরনো মেডিকেল কলেজ ভবন ভেঙে পাঁচ হাজার বেডের নতুন ভবন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। যার কাজ অলরেডি কাজ শুরু হয়ে গেছে।’ ২০২১ সালের মধ্যে রোগ নির্ণয় ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পটি শেষ হবে বলেও জানান জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে মৌখিক অনুমতি দিয়েছেন- প্রতিটি বিভাগীয় শহরে একটি করে ক্যান্সার সেন্টার তৈরি হবে ১০০-১৫০ বেডের। এখন বিভাগীয় শহরগুলোতে তেমন চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। আমাদের দেশে ক্যান্সার রোগ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি কিডনি রোগও বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রত্যেকটা বিভাগীয় শহরে একটি করে কিডনি সেন্টার তৈরি করা হবে। এটাও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন।’
স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতে বর্জ্য শোধন করার কোনো ব্যবস্থা নেই। এটাও আমরা জাপান সরকারের কাছে তুলে ধরেছি। তারা সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।’
আরএমএম/বিএ/জেআইএম