বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকারীদের নিঃশেষের ষড়যন্ত্র অব্যাহত
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকেরা বিশেষ টার্গেট করে বঙ্গবন্ধু পরিবারের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালায়, যাতে করে পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর বংশধর কেউ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে না পারে। এ কারণে শিশু শেখ রাসেলকেও ঘাতকেরা রেহাই দেয়নি। বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকারীদের হত্যার ষড়যন্ত্র এখনও অব্যাহত রয়েছে।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট দেশে না থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহনা। ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে দলের হাত ধরেন শেখ হাসিনা। একই বছর তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
দেশে আসার পরপরই শেখ হাসিনার চলাচলের ওপর অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জিয়াউর রহমানের সামরিক সরকার। এমনকি দেশে ফেরার প্রথম দিন তাকে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে পর্যন্ত যেতে দেওয়া হয়নি নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে। ঝড়ো বৃষ্টির ওইদিনে তাকে আশ্রয় নিতে হয় ফুফাতো ভাই শেখ সেলিমের বাসায়।
শেখ হাসিনার রাজনৈতিক পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার জীবনও হুমকির মুখে পড়ে। শেখ হাসিনার ওপর প্রথম প্রকাশ্যে হামলা করা হয় ১৯৮৩ সালে। ওইদিন শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের লালদিঘি ময়দানে প্রধান অতিতি হিসেবে অংশ নেন। শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে পুলিশ গুলি চালালে আওয়ামী লীগের ১২ জন কর্মী নিহত হন। প্রাণে রক্ষা পান শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনাকে হত্যার সবচেয়ে বড় ষড়যন্ত্র ছিল ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। ওইদিন বঙ্গবন্ধু এভিউনিউয়ে জঙ্গি ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী এক জনসভায় বক্তব্য দেন শেখ হাসিনা। বক্তব্য শেষ হতেই শেখ হাসিনার ওপর অতর্কিত গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।
ওইদিনের গ্রেনেড হামলায় মারাত্বক আহত হন শেখ হাসিনা। তিনি বেঁচে গেলেও দলের ২৬ জন নেতাকর্মী নিহত হন। মারা যান প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী ও মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আইভি রহমানও।
এর আগে শেখ হাসিনাকে হত্যার ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র করা হয় ২০০০ সালে। ওই বছর ২০ জুলাই টুঙ্গিপাড়ার কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনার এক সমাবেশস্থলে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পেতে রাখা হয়। যদিও বোমাটি বিষ্ফোরণ হওয়ার আগেই ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়। ওই হামলার সঙ্গে হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নামের একটি জঙ্গিবাদী সংগঠন জড়িত ছিল বলে দাবি করা হয়।
শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই নয়, তার পুত্র এবং বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কেও হত্যা চেষ্টা চলছে বলে প্রমাণ মিলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা জয়কে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে আমেরিকা প্রবাসী বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে। মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন নামের অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এবং যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সহ-সভাপতি। হত্যা ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র সরকার ওই ব্যক্তিকে তিন বছরের সাজা দিয়েছেন।
এছাড়া ১৯৮৯ সালের ১০ অগাস্ট ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে ফ্রীডম পার্টির নেতৃত্বে হামলার ঘটনা, ২০০২ সালের ৩০ অগাস্ট সাতক্ষীরার কলারোয়ায় বিএনপি কার্যালয়ের সামনে গাড়িবহরে হামলার ঘটনাসহ শেখ হাসিনাকে ১৯ বার হত্যা চেষ্টা চলে।
এএসএস/এআরএস