সরব সদরঘাট তিতলিতে নীরব
সাভার হেমায়েতপুরের বাসিন্দা দরিদ্র রিকশাচালক ইউসুফ মিয়া স্ত্রী ও শিশু সন্তানসহ বুধবার বিকেল থেকে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ভোলাগামী লঞ্চ ছাড়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। তবে ঘূর্ণিঝড় তিতলির ফলে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সদরঘাট থেকে কোনো লঞ্চ ছাড়ছে না।
সকাল সাড়ে ১১টায় টার্মিনালের অনুসন্ধান কেন্দ্রের সামনের মেঝেতে শুয়ে ছিলেন তিনি। স্ত্রীর পীড়াপীড়িতে উঠে অনুসন্ধান কেন্দ্রে গিয়ে কর্তব্যরত কর্মকর্তার কাছে লঞ্চ কখন ছাড়বে তা জানতে চাইলেন। এ সময় মোশতাক আহমেদ নামের এক কর্মকর্তা তাকে জানান, এখনও বিআইডব্লিউ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে গ্রিন সিগন্যাল পায়নি। আবহাওয়া ভাল হলে লঞ্চ ছাড়বে। এতে হতাশ হয়ে ফিরে গিয়ে আবার স্ত্রী-সন্তানের পাশে শুয়ে পড়েন তিনি।
ঘূর্ণিঝড় তিতলির কারণে ইউসুফ মিয়ার মতো কয়েক শ’ যাত্রী টার্মিনালে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন। দূর-দূরান্ত থেকে আসায় বাসায়ও ফিরে যাননি তারা। ব্যাগ, বাক্স-পেটরাসহ টার্মিনালেই পড়ে আছেন। কখন লঞ্চ ছাড়বে তাও জানতে পারছেন না তারা।
সরেজমিন টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, সদাব্যস্ত টার্মিনালটিতে শূন্যতা বিরাজ করছে। সারি সারি লঞ্চ/স্টিমার ঘাটে বাধা। কর্মচারীরা ডেকের সামনে অলস বসে আছেন। যাত্রীরা এসে বারবার জানতে চাইছে কখন স্টিমার/লঞ্চ ছাড়বে। যাত্রীদের কেউ কেউ অবশ্য পোস্তাগোলার দিকে ছুটছেন বাসের জন্য।
১ নম্বর টার্মিনালের অনুসন্ধান কক্ষের কর্মকর্তা মোশতাক আহমেদ জানান, এ লাইনে প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০টি লঞ্চে ৪০ থেকে ৫০ হাজার যাত্রী আসা-যাওয়া করে। গতকাল (বুধবার) থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। বহু যাত্রী এসে ফিরে গেছে। আবার কেউ কেউ টার্মিনালেই রয়ে গেছেন।
এদিকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় টার্মিনালের হোটেল, কনফেকশনারি ও ফল বিক্রেতাসহ সবার মাথায় হাত। আজিজ নামের এক ফল বিক্রেতা বলেন, ‘গতকাইল থাইক্যা এক টাকাও বেচতে পারি নাই। আল্লাহ আল্লাহ করতাছি, কখন স্টিমার ছাড়বো।’
এমইউ/এমবিআর/আরআইপি