নিউজটি পড়ুন, ৫ মিনিটও লাগবে না পড়তে
আমার অভাবের সংসারে এই ছোট্ট শিশুটিই সব আনন্দের উৎস। ওকে দেখেই সব না পাওয়ার দুঃখ ভুলে যাই। আমার সেই আদরের ধন এখন যন্ত্রণায় ছটফট করছে। চিৎকার করে কাঁদছে। অথচ বাবা হয়ে আমি কিছুই করতে পারছি না। ওকে আপনারা বাঁচান ভাই। বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়লেন অসহায় মমিনুল।
আসলেই দু`মাস দশ দিনের মমিতার জন্য মমিনুল বা তার আর্থিক সঙ্গতিহীন পরিবারের কিছুই করার নেই। মমিতা চিকিৎসার অভাবে এখন মৃত্যু পথযাত্রী।
গাইবান্ধা শহরের মধ্যপাড়ার ইউএনও ক্লাবের পেছনে সংকীর্ণ খাস জমিতে পরিবার নিয়ে বাস করেন জেলা দলের সাবেক কৃতি টেবিল টেনিস খেলোয়াড় মমিনুল ইসলাম। দুটি ছোট টিনের ঘরে গাদাগাদি করে থাকেন অসুস্থ বাবা কাশেম আলী, মা মোমেনা বেগম, বোন কলেজ ছাত্রী মঞ্জুরা খাতুন এবং একমাত্র মেয়ে সন্তান মমিতাকে নিয়ে তার স্ত্রী রশিদা বেগম।
কাশেম আলী গায়ে খেটে এক সময় সংসার টানলেও বছর দুয়েক হলো নড়াচড়া করতেই কষ্ট হয় তার। পরিবারকে বাঁচাতে গাজীপুর জেলায় একটি গার্মেন্টসে কাজ নেন মমিনুল। বেতন সর্বসাকুল্যে ছয় হাজার টাকা। আর ওভার টাইম করে আর এক দেড় হাজার টাকা যোগ হয়। কোনোরকমে দিন কাটছিল তাদের। কিন্তু দারিদ্রপীড়িত এ পরিবারটির ওপরেই ধেয়ে এলো নতুন সঙ্কটের বোঝা।
রশিদা জানালেন, তীব্র অভাবের সংসারে মমিতার হাসিমাখা মুখটিই ছিল আমাদের পরম পাওয়া। কিন্তু ১৫ দিন আগে হঠাৎ করেই শুরু হয় শারীরিক যন্ত্রণা। মমিতার কান্না আর থামে না। স্থানীয় ডাক্তারের পরামর্শে দরিদ্র গার্মেন্টস কর্মী মমিনুল ও রাশিদা বেগম ছোটেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে। অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর সেখানেই জানতে পারেন মমিতার হার্টে জন্ম থেকেই দুটি ফুটো রয়েছে। আকাশ ভেঙে পড়ে এ গরিব দম্পতির মাথায়।
মমিতার চিকিৎসক ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের কার্ডিওলজি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আব্দুল্লাহ-আল-মাহমুদ ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা.আব্দুল মালেক সরকার জানান, এই শিশুটিকে বাঁচাতে হলে জরুরি ভিত্তিতে অপারেশনসহ উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। সেজন্য কমপক্ষে ৩ লাখ টাকা ব্যয় হবে।
গার্মেন্টস কর্মী মমিনুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে জানালেন, তার সঞ্চয় মাত্র ছয় হাজার টাকা। বাড়ির সব কিছু বিক্রি করে দিলেও এ টাকার সামান্য অংশও আসবে না। তার প্রশ্ন, তাহলে আমার মমিতার কী বেঁচে থাকার অধিকার নেই?
মমিনুলের বন্ধু জাতীয় পর্যায়ে খ্যাতিমান টেবিল খেলোয়াড় রিমন প্রধান জাগো নিউজকে বলেন, এখন মানুষের ভালোবাসাই পারে মমিতাকে বাঁচাতে। তিনি অসহায় দরিদ্র এ বাবা-মার প্রথম সন্তানের জীবন রক্ষায় বিত্তবান ও হৃদয়বান মানুষদের কাছে আর্থিক সহায়তা কামনা করেছেন।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সব রকম যোগাযোগ করা যাবে মমিতার বাবা মমিনুল ইসলামের ০১৯১১-৭৯৩২১৫ মোবাইল ফোনে। এছাড়া এই একই নম্বরে বিকাশেও ওই শিশুটির জীবন বাঁচাতে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা যাবে।
অমিত দাশ/এমজেড/পিআর