চট্টগ্রামে সতর্ক অবস্থায় পুলিশ
বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘিরে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় চট্টগ্রামে কড়া সতর্কাবস্থায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পোশাকে এবং সাদা পোশাকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন হয়েছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)।
রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে অস্থায়ী বিশেষ আদালতে বহুল আলোচিত এ মামলার বিচারকাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন।
এদিকে যেকোনো ধরনের নাশকতা প্রতিরোধে গতকাল মঙ্গলবার থেকে নগরের ১৭টি পয়েন্টে অবস্থান নেয় চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আজ সকাল ৯টা থেকেও নগরীর লালদীঘি মাঠসহ ১৭টি স্পটে অবস্থানের বিষটি নিশ্চিত করেছে দলটি।
বুধবার (১০ অক্টোবর) সকাল থেকে রায়কে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কড়া নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে নগরজুড়ে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি অফিসের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগরের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মাসুদুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, ‘বহুল আলোচিত এ রায়কে কেন্দ্র করে যাতে কোনো প্রকার নাশকতা ও বিশৃঙ্খলা না সৃষ্টি হয় সে ব্যাপারে নগর পুলিশের পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে। নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পোশাকে এবং সাদা পোশাকে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’
চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন জাগো নিউজকে বলেন, ‘গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণা নিয়ে অরাজকতা ও নাশকতা করতে পারে বিএনপি-জামায়াত। তারা জানমালের ক্ষতি ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে পারে। তাই আমরা রাজপথে থেকে জনগণ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতা করব।’
এদিকে বহুল আলোচিত এ রায়কে কেন্দ্র করে বিএনপি প্রথম দিকে মাঠে থাকার ঘোষণা দিলেও এখন সে অবস্থান থেকে সরে এসে অনেকটা কৌশলী অবস্থান নিয়েছে। দলের নেতারা বলছেন, ‘রায় দেখে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবেন।’
এর আগে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায়কে কেন্দ্র করে বুধবার (১০ অক্টোবর) নগরীর লালদীঘি মাঠে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছিল বিএনপি। লালদীঘিতে অনুমতি না পেলে দলীয় কার্যালয় মাঠে তারা অবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু পুলিশের অনমুতি না পাওয়ায় সেই কর্মসূচি থেকেও পিছু হটেছে দলটি।
১৪ বছর আগে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যা করা হয়। এ সময় আহত হন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পুলিশ তদন্ত করে ৫২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। আদালত তা আমলে নিয়ে বিচার শুরু করেন। রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণের জন্য ২২৫ সাক্ষীকে আদালতে হাজির করে। রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে গত ১৮ সেপ্টেম্বর আদালত রায়ের জন্য দিন ঠিক করেন। ৫২ আসামির মধ্যে অন্য মামলায় জামায়াত নেতা আলী আহসান মুজাহিদ, হুজি নেতা মুফতি হান্নানসহ তিনজনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। কারাগারে আছেন ৩১ আসামি। মামলার আসামি তারেক রহমানসহ পলাতক আছেন ১৮ জন।
এনডিএস/পিআর