শূন্য হাতে দেশে ফিরেছেন পুরুষ শ্রমিকরা

রফিক মজুমদার
রফিক মজুমদার রফিক মজুমদার , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:০৪ এএম, ০৬ অক্টোবর ২০১৮

কাজের তাড়নায় সৌদি আরব পাড়ি দিয়েছিলেন সাহাদাত হোসেন। কিন্তু অর্থের অভাবে কাজের জন্য অনুমতিপত্র (আকামা) নিতে পারেননি। ধার-দেনা আর সহায় সম্বল বিক্রি করে দেশে ফিরেছেন একেবারে শূন্য হাতে। শুধু সাহাদাত হোসেন নয়, শুক্রবার দুপুরে তার মত আরও ১৫০ জন শ্রমজীবী পুরুষ দেশে ফিরে এসেছেন। এছাড়া হাজার হাজার বাংলাদেশি আসার জন্য অপেক্ষমাণ বলে জানান ফেরত আসা শ্রমিকরা।

দেশে ফিরে প্রবাসী শ্রমিকরা এভাবেই তাদের হতাশা এবং ক্ষোভের কথা জানান। সৌদি আরবে ধরপাকড়ের কারণে গণহারে দেশে ফিরে আসছেন পুরুষ শ্রমিকরা।

ফিরে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে মাত্র ১১৭ জন প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কে নিবন্ধন করেছে। এর আগে বুধবার দেশে ফিরেছেন ১৪৪ জন, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে এসেছেন আরও ১৭০ জন। এছাড়া, আরও বিভিন্ন ফ্লাইটে কতজন দেশে ফিরেছেন তার কোনও হিসাব পাওয়া যায়নি।

অভিযোগ গ্রহণকারী প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের কর্মকর্তা তানভীর হোসেন জানান, ফেরত আসার হার প্রতিদিন বাড়ছে। আগামীতে এই চিত্র আরও ভয়াবহ ও উদ্বেগের কারণ হতে পারে। সৌদি সরকার তাদের ধরে ধরে দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে।

শুক্রবার বিকেলে ফেরত শ্রমিক সাহাদাত হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে এক বছর আগে রফিকুল ইসলাম নামে এক এজেন্সি মালিকের মাধ্যমে সৌদি আরবে গিয়েছিলাম। ফিরে এসেছি একেবারে শূন্য হাতে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সৌদি আরবের নাগরিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে দেশটির সরকারের নেয়া সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছে সেদেশে অবস্থানরত বিদেশি শ্রমিকরা। সৌদি সরকার ১২টি সেক্টরকে সৌদিকরণ করার ঘোষণায় গত ১৫ মাসে ৭ লাখ ২০০ জন প্রবাসী শ্রমিক দেশ ফিরেছেন।

উল্লেখ্য, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের ১৫৮টিরও বেশি দেশে জনশক্তি রফতানি করে বাংলাদেশ। বিএমইটি’র তথ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত প্রায় এককোটি ২০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে বিদেশে। এর ফলশ্রুতিতে দেশে রেমিটেন্স এসেছে প্রায় ১৩ লাখ কোটি টাকা। ২০১৫ সালে এসেছে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স, যার পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া, ২০১৭ সালে এ যাবতকালের সবচেয়ে বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে, যার পরিমাণ ১০ লাখ।

আরএম/জেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।