সিনহার অ্যাকাউন্টে ৪ কোটি টাকা লেনদেনে অনিয়ম : দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:২৩ পিএম, ০৪ অক্টোবর ২০১৮
ফাইল ছবি

ফারমার্স ব্যাংক থেকে সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার ব্যাংক হিসাবে ৪ কোটি টাকা লেনদেনের ঘটনায় জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার বিকেলে দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ একথা বলেন।

একইসঙ্গে জালিয়াতির সঙ্গে একাধিক ব্যক্তি জড়িত হওয়ার তথ্য রয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে দুদক চেয়ারম্যান কারও নাম উল্লেখ করেননি।

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, ফারমার্স ব্যাংকের দুটি অ্যাকাউন্ট থেকে ৪ কোটি টাকা ঋণের ব্যাপারে আমরা তদন্ত করেছি। তদন্ত শেষ হয়ে গেছে। অনেকের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে বা চিহ্নিত করা হয়েছে। ঋণ প্রক্রিয়ায় জালিয়াতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। আমরা সেগুলো বিচার বিশ্লেষণ করছি।

সাবেক প্রধান বিচারপতির জড়িত কি-না এমন প্রশ্নে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি থাকুক আর যেই থাকুক। যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে বা যাবে তাদের বিরুদ্ধেই আমরা ব্যবস্থা নিবো।

তিনি বলেন, দুটি অ্যাকাউন্ট থেকে ঋণ প্রক্রিয়া এবং এই টাকা মানিলন্ডারিং বা বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া, নগদ উত্তোলন এসব বিষয়ে অনেক কিছু এসেছে।

দুদকের পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যা হয়, তাই হবে। যদি অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে আইন অনুযায়ী মামলা হবে।

এস কে সিনহার ব্যাংক হিসাবে চার কোটি টাকা জমা হওয়ার বিষয়ে দুদক অনুসন্ধান করছে। অভিযোগ অনুসন্ধানে গত ৬ মে ও ২৬ সেপ্টেম্বর মোট আটজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৬ সেপ্টেম্বর ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক এমডি কে এম শামীমসহ ছয় কর্মকর্তাকে সাড়ে ৬ ঘণ্টাব্যাপী জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। আর গত ৬ মে দুই ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। যারা এস কে সিনহার ব্যাংক হিসাবে চার কোটি টাকা স্থানান্তরের বিষয়টি স্বীকার করেন।

ওই দিন তাদের সঙ্গে আসা আফাজ মাহমুদ রুবেল এবং নাজমুল আলম নামের দুই আইনজীবী সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন এস কে সিনহাকে তার বাড়ি বিক্রির চার কোটি টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়েছে।

আইনজীবীরা বলেন, এস কে সিনহার উত্তরার ছয় তলা বাড়িটি পাঁচ কাঠা জমির ওপর ছিল। এ বাড়িটি ২০১৬ সালের শুরু দিকে টাঙ্গাইলের বাসিন্দা শান্তি রায় ছয় কোটি টাকায় ক্রয় করেন। এ সময় বায়না দলিলকালে তিনি দুই কোটি টাকা পরিশোধ করেছিলেন। বাকি টাকা পরিশোধের জন্য নিরঞ্জন ও শাহজাহানের সহযোগিতা নেন। নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা শান্তি রায়ের স্বামী রনজিতের চাচা শ্বশুর। আর শাহজাহান রনজিতের বন্ধু। বাড়ি কিনতে বাকি চার কোটি টাকা ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে নিরঞ্জন ও শাহজাহান (দুই কোটি টাকা করে) ঋণ নেন।

তাদের তথ্যানুযায়ী, ২০১৬ সালের মে মাসে জমির বায়না দলিল হয় এবং ওই বছরের ৮ নভেম্বর দুটি পে-অর্ডারের মাধ্যমে এস কে সিনহা সোনালি ব্যাংক সুপ্রিম কোর্ট শাখার মাধ্যমে চার কোটি টাকা গ্রহণ করেন।

এমইউএইচ/জেএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।