‘তালি বাজানোর কিছু নেই’
ডিবিসির প্রধান সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম প্রশ্ন করার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান। শেখ হাসিনা বলেন, ‘যার সঙ্গেই কথা হয়েছে, তারা আমাকে আরও বেশি উৎসাহিত করেছেন এবং তারা সত্যি কথা বলতে উইশ করেছেন যেন আমি পুনরায়...।’
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর এ কথা শুনেই অনেকে তালি দিতে থাকেন। প্রধানমন্ত্রী তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘তালি বাজানোর কিছু নেই। জনগণ ভোট দিলে আছি, না দিলে নাই। এ জন্য আমার কোনো আফসোসও নাই। আমি এটুকু বলি যার সঙ্গেই কথা হয়েছে সবাই এটুকু ব্যক্ত করেছে যে আবার দেখা হবে।’
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে যোগদান শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিনের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির জনকের হত্যাকারীদের বিষয়ে যখন আমেরিকার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে, তার রিসিপশনে আমি গিয়েছিলাম, সেখানেও আমি বলেছি। তিনি খুব আগ্রহ দেখালেন এবং সঙ্গে সঙ্গে নোট নিলেন। এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও আলাপ হয়েছে। আমরা আশাবাদী।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ। তিনি বলেন, ‘দেরিতে হলেও আপনার জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’ এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দিলেন তো বয়সটা মনে করিয়ে বার বার। মনে হয় বয়সটা বেড়ে গেল।’
সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান প্রশ্ন করেন ‘আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একটা বড় জোট হচ্ছে, এ বিষয়ে আপনি ভয় পাচ্ছেন কি-না’, এমন প্রশ্ন শুনে প্রধানমন্ত্রী হেসে ফেলেন।
তিনি বলেন, ‘প্রথম কথা হচ্ছে একটা জোট হচ্ছে, আমি খুশি। তাদের জোট করার জন্য যা যা সহযোগিতার প্রয়োজন সেটাও করতে রাজি। বাংলাদেশে ভোট হয় আওয়ামী লীগ আরেকটা হচ্ছে এন্টি আওয়ামী লীগ। এন্টি আওয়ামী লীগ যারা, তাদের তো যাওয়ার একটা জায়গা লাগবে। এখন জোট যখন হচ্ছে বড় করছে। বড় বড় মানুষও আছে। জোট হওয়া তো ভালো কথা, শত ফুল ফুটতে দিন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটা নির্বাচনের জন্য ভালো। নির্বাচনে আসবে কিনা, আসতে পারবে কিনা, সেই সাহস তাদের আছে কিনা-সেটাও একটা প্রশ্ন। জোট যখন হচ্ছে, আমি সাধুবাদ জানাচ্ছি।’
এ সময় জোট করার জন্য প্রয়োজনে লোক দেয়ার কথাও বলেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রক্রিয়াটা চলতে থাক। এতে আমার ভয়ের কিছু নেই। ভয় আছে তার, যার হারাবার কিছু আছে। আমার তো হারাবার কিছু নাই।’
কোটা বাতিল নিয়ে সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খানের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যখন বললাম কোটা থাকবে না, তখন বলল বাতিল চাইনি সংস্কার চেয়েছি। আগে বলেছে, বাতিল পরে বলে সংস্কার। কোটা যদি না থাকে সংস্কারের প্রশ্ন উঠবে না। আর যদি কারও কোটা চাই, তাহলে কোটা চাই বলে আন্দোলন করতে হবে। আর সেই আন্দোলন যদি ভালোভাবে করতে পারে-তখন ভেবে-চিন্তে দেখবো কী করতে পারি? আন্দোলন ছাড়া কিছু দেব না।’
সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুলের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা শয়তানের সহযোগিতা চায়, শয়তানের সান্নিধ্য চায় তারা নিজেরা কী এটা আপনারাই বুঝেন। আমার বলার কিছু নেই। এতেই তাদের মন-মানসিকতাটা বুঝা গেছে। যারা শয়তানের সঙ্গে হাত মেলাবে তাদের সমর্থন দিতে দেশবাসী প্রস্তুত কিনা। নিশ্চয়ই দেশের মানুষ শয়তান চায় না।’
প্রায় ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এইউএ/জেএইচ/এমএস