সাংবাদিকরা উদ্বিগ্ন বুঝলাম, কিন্তু আমাদের উদ্বেগটা কে দেখবে?
সম্প্রতি পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগের আশঙ্কায় সাংবাদিকদের উদ্বেগের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি এখানে স্পষ্ট বলব, যে সাংবাদিকরা মনে করে তারা কোনো অন্যায় কাজ বা কারও বিরুদ্ধে অপবাদ বা কোনো মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করবে না তাদের উদ্বেগ হওয়ার কোনো কিছু নাই।'
তিনি বলেন, ‘মিথ্যা সংবাদের কারণে কোনো সংসদ সদস্য এলাকায় অসম্মানিত হলে, সেটার কী হবে? সাংবাদিকরা উদ্বিগ্ন বুঝলাম, কিন্তু আমাদের উদ্বেগটা কে দেখবে?’
বুধবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে যোগদানের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রে সপ্তাহব্যাপী সরকারি সফর করেছেন। এ সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর বেশ কিছু প্রাপ্তিসহ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে বৈঠক ও তার ফলাফল বিস্তারিত তুলে ধরেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সংযুক্তি প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা জিনিস ওখানে ঢুকানো উচিত। আমি মনে করি, যদি কেউ কারো বিরুদ্ধে কোনো মিথ্যা তথ্য দেয় তাহলে সেই মিথ্যা তথ্যটা তাকে প্রমাণ করতে হবে যে সেটা সত্য। যদি সত্য প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়, সেই সাংবাদিক যে লিখবে, যে মিডিয়া ইলেকট্রনিক্স হোক বা ডিজিটাল ডিভাইস হোক বা যে এটা প্রকাশ করবে তাদের সবাইকে শাস্তি পেতে হবে এবং যার বিরুদ্ধে লিখবে তার জন্য তাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে যেটা ইংল্যান্ডে আছে।’
তিনি বলেন, বিবিসি একজন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করেছিল। প্রমাণ হওয়ার পর সবাইকে রিজাইন করতে হয়েছে। কিন্তু যার বিরুদ্ধে ওই সংবাদ প্রকাশ করা হলো, তিনি তো ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েই গেলেন। কিন্তু যে প্রকাশ করল, তার তো কিছু হলো না। তার যে সম্মানটা গেল, ক্ষতি হলো, তার ক্ষতিপূরণ হবে কীভাবে? পদ্মা সেতু নিয়ে অনেকের অনেক কথা মিথ্যা প্রমাণিত হলো। কিন্তু আমাদের যে ক্ষতিটা হলো, তার কী হবে?
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কারও যদি অপরাধী মন না থাকে, ভবিষ্যতে অপরাধের পরিকল্পনা না থাকে, তার উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নাই। আগে তো সমন জারি করা হতো না, সরাসরি গ্রেফতার করা হতো।
তিনি আরও বলেন, ‘মিটিং-টিটিংয়ে যেসব মানুষদের দেখলাম, তাদের উদ্বিগ্ন হওয়ারই কথা। তারা তো ফাইল নিয়ে রেডি হয়েছে আমাদের বিরুদ্ধে লিখবে-সরকার এই করেনি, ওই করেনি। আপনাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নাই। অন্তত আমি থাকতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নাই।’
কেএইচ/জেএইচ/এমএস