বিমানবালা মাসুমার অন্ধকার জগতের খোঁজে গোয়েন্দারা

রফিক মজুমদার
রফিক মজুমদার রফিক মজুমদার , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:০৭ পিএম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী ফ্লাইটে মদ্যপ অবস্থায় দায়িত্ব পালনের অভিযোগে গ্রাউন্ডেড (দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কেবিন ক্রু (বিমানবালা) সৈয়দা মাসুমা মুফতির অন্ধকার জীবনের খোঁজ-খবর নিতে শুরু করেছেন গোয়েন্দারা।

গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মাসুমা মুফতির বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসার দিকে তাদের কড়া নজর রয়েছে। একই এলাকায় থাকেন তার বস নুরুজ্জামান রঞ্জু। ঢাকায় থাকাকালীন মাসুমা মুফতি কাদের সঙ্গে মেলামেশা করেন, কাদের সঙ্গে রাতে আড্ডা দেন, সেই খবরও পেতে শুরু করেছেন তারা।

তিনি জানান, সুন্দর চেহারা এবং আকর্ষণীয় ফিগারের কারণে মাসুমাকে দিয়ে সব সময় বিজনেস ক্লাসে ডিউটি করানো হতো। সেই সুযোগে তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন। এদের মধ্যে কার কার সঙ্গে তিনি অভিজাত এলাকায় রাতের পার্টিতে যোগ দেন এবং প্রধানমন্ত্রীর ফ্লাইটের আগের রাতে এ ধরনের কোনো পার্টিতে অংশগ্রহণ করেছেন কিনা তার খোঁজ নেয়া হচ্ছে। কোথায় কী ধরনের মাদক গ্রহণ করেছেন তারও অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। তাকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

এদিকে বিমানের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে নিরাপত্তা কর্মীদের সহযোগিতায় ঢাকা থেকে লন্ডন গিয়ে ফিরতি ফ্লাইটের ডিউটিরতদের ডোপ টেস্টের প্রস্তাব দেয়া হলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন।

biman-2

বিমান সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার কোন পরিস্থিতিতে মাসুমা মুফতি মদ্যপ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর ফ্লাইটে ডিউটি করার সাহস দেখালো- গোয়েন্দাদের এই প্রশ্নের জবাবে যৌক্তিক ব্যাখ্যা দিতে পারছে না বিমান কর্মকর্তারা। এ প্রেক্ষাপটে গোয়েন্দাদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর ফিরতি ফ্লাইটেও বিমানের যেসব স্টাফ ডিডটি করবেন তাদের সবার ডোপ টেস্ট করার পরামর্শ দেয়া হয়। সেটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার সকালে বিমানের ব্রিফিং রুমে র‌্যান্ডম ডোপ টেস্ট করার সময় ১৮ জন কেবিন ক্রুর মধ্যে সবারটা নেগেটিভ হলেও শুধু মাসুমা মুফতির শরীরেই পজেটিভ সাইন ধরা পড়ে। অর্থাৎ তিনি চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে মাদক সেবন করেছেন তা প্রমাণিত হয়। তারপর সিদ্ধান্ত নেয়া হয় তাকে অফলোড করার। বিষয়টি তার বিভাগীয় প্রধান রঞ্জুকে জানানো হলে তিনি বিষয়টি তাৎক্ষণিক এয়ারপোর্ট জিএম নুরুল ইসলাম হাওলাদারকে অবহিত করেন এবং প্রধানমন্ত্রীর ফ্লাইটে ডিউটিতে চলে যান। কিন্তু তার একদিন পরই আবারও মাসুমাকে সিঙ্গাপুর ফ্লাইটে ডিউটি দেয়া হয়। গোয়েন্দারা এ সংবাদ পেয়ে বিস্মিত হন।

এত বড় ঘটনার পর কার সহযোগিতায় তাকে পরদিন আবার ড্রিমলাইনারে ডিউটি দিয়ে সিঙ্গাপুরে ফ্লাইট দেয়া হলো- এমন প্রশ্নের জবাবে বিমানের সদ্য যোগদান করা গ্রাহক সেবা পরিচালক মমিনুল ইসলাম বলেন, সব খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। অনিয়মে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

আরএম/এমবিআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।