উত্তরাঞ্চলজুড়ে পানির জন্য হাহাকার


প্রকাশিত: ০৭:২৬ পিএম, ১১ আগস্ট ২০১৫

সমগ্র উত্তরাঞ্চলজুড়ে চলছে পানির হাহাকার। ফেটে চৌচির হচ্ছে ফসলি জমি। একই কারণে পাট জাগ দিতে পারছেন না কৃষক। গত বছরের তুলনায় এ অঞ্চলে এবার গড় বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় ফসল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এখানকার কৃষক।

সময়ে অসময়ে সামান্য বৃষ্টিপাত হলেও তা কোনো কাজেই আসছে না কৃষকদের। এক সময় উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে ব্যাপকহারে পাটের আবাদ হতো। কিন্তু বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় এখন আর হয় না। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দিন দিন এই অঞ্চলে পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। এ কারণে সকল প্রকার আবাদ থেকে আগ্রহ হারাতে বসেছেন এ অঞ্চলের কৃষক।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জেলায় এ বছর ১০ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চাষ হয়েছে আট হাজার ৩৩০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে তোষা জাতের পাট চাষ হয়েছে ছয় হাজার ৯৭০ হেক্টর জমিতে। দেশি জাতের পাট চাষ হয়েছে এক হাজার ৩৬০ হেক্টর জমিতে। গত বছর যার পরিমাণ ছিল এক হাজার ১৫০ হেক্টর।

এ বছর ঠাকুরগাঁওয়ের পাঁচটি উপজেলার মধ্যে সদর উপজেলায় পাট চাষের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে চার হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে। আর চাষ হয়েছে তিন হাজার ২০০ হেক্টর জমি।


পীরগঞ্জ উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় এক হাজার ১৫০ হেক্টর। চাষ হয়েছে এক হাজার ১০ হেক্টর। বালিয়াডাঙ্গি উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় দুই হাজার ৪৪০ হেক্টর। আর উৎপাদন হয় দুই হাজার ৫০ হেক্টর। রাণীশংকৈল উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় এক হাজার ৯০০ হেক্টর। চাষ হয়েছে এক হাজার ৪৫০ হেক্টর।

হরিপুর উপজেলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৯২০ হেক্টর। চাষ হয়েছে ৬২০ হেক্টর। খরার কারণে ঠাকুরগাঁও জেলার কৃষক এবার এক হাজার ৩৬০ হেক্টর জমির পাট জাগ দিতে পারেনি। খালে বিলে পানি না থাকায় মাঠ থেকে কেটে রাখা পাট পচাতে পারছে না তারা।

অন্যদিকে, পাটের আঁশ ছড়াতে কৃষককে রিবন রেন্টিং মেশিন ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি বিভাগ। পদ্ধতিটি কৃষকের না জানা থাকায় সেটি কোনো কাজে আসছে না। পানির অভাবে পাট পচাতে না পারাই পাট গাছগুলো পাট খড়িতে পরিণত হচ্ছে। এতে করে পাট চাষিরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

এ চিত্র শুধু ঠাকুরগাঁওয়ের নয়। একই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে পঞ্চগড়, দিনাজপুর, নীলফামারীসহ আশপাশের জেলাগুলোতেও। ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলার কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের।


তারা জানায়, পানির অভাবে ক্ষেত থেকে পাট কাটা কঠিন হয়ে পড়েছে। সেচের গভীর নলকূপের কার্ড এবং শ্যালো মেশিনের জন্য ডিজেল কিনতে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে পাট চাষিরা। জামাল উদ্দীন নামে এক কৃষক জানালেন, দুই- একদিনের মধ্যে বৃষ্টি না হলে পাট গাছগুলো সক খড়ি হয়ে যাবে।

খরার কারণে এবার জেলায় পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা পুরণে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের কৃষক। খরা মোকাবেলায় সরকারকে আর্থিক সুবিধা দেয়ার দাবি জানিয়েছেন পাট চাষিরা।

এমএএস/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।