তখনও বাজছিল এফএম রেডিও-হর্ন...
মালিকের ছোট ভাইকে বনানীতে নামিয়ে দিয়ে হাইএস মাইক্রোবাস নিয়ে মিরপুরের বাসায় ফেরার পথে দুর্ঘটনার শিকার হন চালক আবুল কালাম। অপর একটি গাড়িকে সাইড দিতে গিয়েই হাতিরঝিলের ব্রিজের রেলিং ভেঙে পানিতে পড়ে যান।
চালক আবুল কালামকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও গাড়ির ইঞ্জিন তখনও বন্ধ হয়নি। দুপুর ১২টায়ও দেখা গেছে গাড়িটিতে চলছিল এফএম রেডিও, বাজছিল হর্ন।
শনিবার ভোর সোয়া ৫টার দিকে হাতিরঝিলের পুলিশ প্লাজার পেছনে বাঁক নেয়া ব্রিজে একটি গাড়িকে সাইড দিতে গিয়েই দ্রুতগামী একটি হাইস মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ব্রিজের রেলিং ভেঙে পানিতে পড়ে যায়। পরে সোয়া ৮টার দিকে স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীদের দেয়া খবরে তেজগাঁও ফায়ার স্টেশনের একটি দল গাড়িটি উদ্ধারে আসে।
শনিবার দুপুর ১২টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, হাতিরঝিল থেকে গুদারাঘাটের সড়ক হয়ে বাড্ডা যাওয়ার পথে ব্রিজের নিচে পড়ে থাকা গাড়িটি উদ্ধারের চেষ্টা করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে গাড়ি তোলা দেখছিলেন গাড়ির মালিক মিরপুর-২ এর জি-ব্লকের লাভ রোডের ১০নং বাসার বাসিন্দা মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমার এ ব্যক্তিগত গাড়িতে করে ছোট ভাইকে বনানীর একটি অফিসে ভোরে নামিয়ে দিতে যায় চালক আবুল কালাম। ফেরার পথেই দুর্ঘটনা।
কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফেরার পথে গাড়িতে চালক কালাম ছাড়া আর কেউ ছিল না। ঠিক কী কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটলো বলা মুশকিল। দুর্ঘটনায় চালক কালাম আঘাত পেয়েছে। তাকে প্রথমে রামপুরার একটি ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাসায় পাঠানো হয়েছে। এখন গাড়িটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
তেজগাঁও ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র অফিসার ফয়সালুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে দেখি পানিতে ভাসছে হাইস মাইক্রোবাসটি। ওয়াটার টেক্সি চলায় পানিতে সৃষ্ট ঢেউয়ে গাড়িটি ভেসে অনেক দূর সরে গেছে। পুলিশ প্লাজা থেকে ব্রিজে উঠতে বাঁক রয়েছে। সেখানেই যদি গাড়িটিকে অন্য কোনো যানবাহন ধাক্কা দিয়ে থাকে তবে বিপরীত পাশে পড়ার কথা। কিন্তু তা হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, পাশের আরেকটি গাড়িকে সাইড দিতে গিয়ে দ্রুতগামী হাইস মাইক্রোবাসের চালক নিয়ন্ত্রণ রক্ষা করতে পারেননি। বাঁক না নিতে পেরে সোজা রেলিং ভেঙে খালে পড়েছে। ভোরে ফাঁকা সড়কে এমন দুর্ঘটনা দুঃখজনক।
তিনি বলেন, গাড়িটি চলমান অবস্থায় এফএম রেডিও চালু ছিল উচ্চশব্দে। দুপুর ১২টায়ও সে রেডিও চলছিল। বেজে চলেছে হর্নও। গাড়ি চালনায় চালক কালাম যথাসম্ভব মনোযোগী ছিলেন না। আমরা গাড়িটির উদ্ধার ও হতাহতদের উদ্ধারের জন্য অ্যাম্বুলেন্স, ইমার্জেন্সি টেন্ডার (ইটি) ও চেইন কপ্পা নিয়ে এসেছি। হতাহত না থাকায় অ্যাম্বুলেন্স ফেরত পাঠানো হয়েছে। ইটি ও চেইন কপ্পা দিয়ে গাড়িটি খাল থেকে টেনে তোলা হচ্ছে।
জেইউ/বিএ/এমএস