‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে বাঁচান’ আকুতি আব্দুস সাত্তারের (চতুর্থ পর্ব)
গাড়ি নিয়ে বিশ্বভ্রমণে বের হয়ে নিজ দেশে ৫ বছর ৩ মাস ধরে হয়রানির শিকার আব্দুস সাত্তারকে নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদনের চতুর্থ পর্ব আজ। গাড়ি নিয়ে বিশ্বভ্রমণে বের হয়ে নিজ দেশে দীর্ঘ সময় ধরে হয়রানির শিকার আব্দুস সাত্তার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতা চান। তিনি মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে তার হয়রানির বিষয়টি আসলে তিনি নিশ্চয়ই উদ্যোগ নেবেন। জাগো নিউজের কাছে এভাবেই তার প্রত্যাশার কথা জানান আব্দুস সাত্তার।
জানা গেছে, আজ থেকে আরো প্রায় আড়াই বছর আগে আব্দুস সাত্তার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে বিষয়টি আনতে চেষ্টা করেন। সে জন্য তিনি ছাপান কিছু রঙিন পোস্টার। সাটান রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়। কিন্তু ফল হয়নি।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারক লিপিও দিয়েছেন আব্দুস সাত্তার। ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর দফতরে একটি স্মারক লিপি জমা দেন তিনি। কিন্তু সেই স্মারক লিপিটি আদো প্রধানমন্ত্রীর হাতে পৌঁছেছে কিনা সেটি নিয়ে শংসয় রয়েছে -বলছিলেন আব্দুস সাত্তার।
স্মারক লিপিতে তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে আমি বের হয়েছি। ২৭টি দেশ ভ্রমণ করেছি। তুরস্কে পুলিশ বেশে ডাকাতির কারণে আমার অর্থসহ ভ্রমণ সংক্রান্ত এবং গাড়ির কাগজ পত্র লুট হয়। ওই সময় আমি আমার গাড়ির কারনেট ডি পাস হারিয়ে ফেলি। ফলে বাংলাদেশের বন্দরে আমার গাড়িটি আটকা পড়েছে। বিষয়টির সুরাহার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। এ অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য আপনার সহায়তা চাইছি। আপনি আমাকে বাঁচান।
আবদুস সাত্তারকে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও বেশ কয়েকবার মানববন্ধন করেছে। করেছে সংবাদ সম্মেলনও। কিন্তু কোন চেষ্টাই যেন কাজে আসেনি।
বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে আব্দুস সাত্তার টরন্টো থেকে সড়কপথে রওনা দেন ২০০৯ সালের ২ আগস্ট। একই গাড়িতে (মিতসুবিশি আউটল্যান্ডার, ২০০৬ সাল, রেজিস্ট্রেশন : বিবিবিবি ৯৩৫) শ’দুয়েক দেশ পরিভ্রমণ করে বিশ্বরেকর্ড গড়বেন- এমনই স্বপ্ন তার। বড় রকমের বিপত্তি ছাড়াই সাত্তার পাড়ি দিয়েছেন ২৭টি দেশ। পাকিস্তানে পৌঁছে করাচি স্থলবন্দর থেকে তিনি গাড়িটি তুলে দেন কনটেইনারে। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দর থেকে গাড়িটি নিয়ে আবারও তার বিশ্বভ্রমণে বেরিয়ে পড়ার কথা। সাত্তার বাংলাদেশে পৌঁছেন ২০১০ সালের ২৯ মে। আর তখন থেকেই তিনি নিজের দেশে টানা ৫ বছর ধরে গাড়িটি চট্টগ্রাম শুল্ক বিভাগ থেকে ছাড় করানোর জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছেন। অসংখ্য মন্ত্রণালয়, দফতর ও সরকারি বড় কর্তাদের টেবিল থেকে টেবিলে ঘোরাঘুরি করেছেন। তবে সব প্রচেষ্টাই নিষ্ফল হয়েছে। তবুও মনোবল হারাননি সাত্তার। এখনো অপেক্ষায় রয়েছেন বিশ্বভ্রমনের।
# এক বছরেও দেখা পেলেন না অর্থমন্ত্রীর (পর্ব তৃতীয়)
# আমলাতন্ত্রের গোলক ধাঁধায় বিশ্ব জয়ের স্বপ্ন (প্রথম পর্ব)
# থেমে যাবেন বলে স্বপ্ন দেখেননি আবদুস সাত্তার (দ্বিতীয় পর্ব)
এসএ/আরএস/আরআইপি