সংসদে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের দায় নিচ্ছে না কেউ, দুটি তদন্ত কমিটি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:১৯ এএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

জাতীয় সংসদে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটনায় বিদ্যুৎ বিভাগ ও ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি (ডিপিডিসি) দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। অধিকতর তদন্তের মাধ্যমে কমিটি দুটিকে দ্রুত প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে নজিরবিহীন এই ঘটনার দায় নিতে চাচ্ছে না কেউ। একে অন্যের ওপর দোষ চাপাচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো।

জানা যায়, বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্মসচিব ফয়জুল আমীনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি এবং ডিপিডিসির পরিচালক (অপারেশন) এ টি এম হারুনুর রশীদকে প্রধান করে চার সদস্যের আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে জাতীয় সংসদে নেমে আসে অন্ধকার। বিকেল ৫টায় সংসদ অধিবেশন শুরুর ১৫ মিনিট আগে বিদ্যুৎ চলে যাওয়া পরও সেখানে লাইন দিতে না পারায় সংসদের বেশির ভাগ ব্লক অন্ধকারে ছেয়ে যায়। এ জন্য অধিবেশনও শুরু হয় ১৫ মিনিট পরে। তবে কিছু কিছু ব্লকে জেনারেটর নিয়ে আলোর ব্যবস্থা করা হয়। এ ব্যবস্থায় ঘণ্টাখানেক অধিবেশন চলার পর ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া সংসদের সব কাজ স্থগিত করে বুধবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি করেন।

এ বিষয়ে পরে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের সংসদ চলে মেঘনা ঘাটের ৪০০ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎগ্রিডের মাধ্যমে। কিন্তু সেখানে কারিগরি সমস্যা দেখা দেয়ায় সংসদের বিদ্যুৎ বন্ধ রয়েছে। এ জন্য সংসদের অধিবেশন মুলতবি করা হয়েছে।’

সংসদের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর তা আসলেও সংসদের লাইন দেয়া যাচ্ছিল না। বারবার কেটে যাচ্ছিল। এ জন্য এখন আর লাইন দেয়ার সাহস পাচ্ছেন না কর্মকর্তারা। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে লাইন দেয়া হবে।

সংসদের চিফ হুইপ ও ডেপুটি স্পিকারের কার্যালয়ের কয়েকটি রুম ঘুরে দেখা গেছে, তারা মোবাইলের আলো দিয়ে জরুরি কাজ করছেন। পরে অবশ্য সন্ধ্যা ৭টায় সংসদের বিদ্যুৎ আসে।

এ বিষয়ে ডিপিডিসির প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী পরিচালক মো. রমিজ উদ্দিন সরকার বলেন, ‘মেঘনা ঘাটের ৪৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র ট্রিপ করায় পিজিসিবির আমিনবাজারের ১৩২ কেভি গ্রিড লাইন ‘ট্রিপ’ করে। এতে আমিন বাজার থেকে সংসদ ভবনে আসা ডিপিডিসির লাইনটিতে লো ভোল্টেজের সমস্যা হয়। এরপর সে বিদ্যুৎ সংসদ ভবনে আসার পর সেখানেও সমস্যা হয়, যার ফলে ডিপিডিসির বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জেনারেটর চালু হয়ে যায়। ডিপিডিসির কোনো সমস্যা ছিল না।’

এদিকে এ ঘটনার পর পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুম আল বেরুনী বলেন, ‘আমাদের কোনো লাইন ট্রিপ করেনি। ফলে পিজিসিবির লাইনের কারণে এ ঘটনা ঘটেনি। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি ডিপিডিসি বা পিজিসিবির সমস্যা নয়। যেহেতু সংসদের বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্ব পালন করে গণপূর্ত (বিদ্যুৎ) বিভাগ। তাদের কোনো সমস্যা হতে পারে।’

তবে রাতে সংসদের গণপূর্তের একাধিক কর্মকর্তাকে ফোন দেয়া হলেও তারা কেউ রিসিভ করেননি।

সংসদের বৈঠকে মঙ্গলবার প্রশ্নোত্তর পর্ব ছাড়াও জরুরি জনগুরুত্বপূর্ণ নোটিশ, তথ্য কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন, দুটি বিল নিয়ে স্থায়ী কমিটির প্রতিবেদন, একটি বিল উত্থাপন এবং একটি বিল পাসের কর্মসূচি ছিল। সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, স্থগিত হওয়া কর্মসূচিগুলো আজ বুধবার নিষ্পত্তি করা হবে।

এইচএস/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।