‘ট্রাক ড্রাইভাররা রিকশা চালাতে চায়’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:১৮ পিএম, ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সম্প্রতি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পাওয়া সড়ক পরিবহন আইনের বিরোধিতা করেছে ট্রাক মালিক-শ্রমিকেরা। এ বিষয়ে ট্রাক কাভার্ড ভ্যান ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতির সভাপতি হাজী মকবুল আহমেদ বলেছেন, ড্রাইভাররা বলে এই আইন তাদের জন্য অত্যন্ত কঠোর। অনেকেই ট্রাক চালাচ্ছেন না। বলেছেন, প্রয়োজনে রিকশা চালাব, তবে এমন আইনে ট্রাক চালাব না।

আজ (রোববার) রাজধানীর তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ড সংলগ্ন সড়ক পরিদর্শন করেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্যানেল মেয়র জামাল মোস্তফা। পরে তার সঙ্গে ট্রাক মালিক-শ্রমিক সমিতির বৈঠকে ওই আইন নিয়ে আলোচনা হয়।

আলোচনায় ট্রাক-কাভার্ডভ্যান ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতির সভাপতি হাজী মকবুল আহমেদ বলেন, আইন অনুমোদন পাওয়ার পর অনেক ড্রাইভার ট্রাক চালাতে ভয় পায়। তারা বলছে, যেই ঝুঁকি এই আইন ও ট্রাক চালানোর মধ্যে আছে সেটা রিকশা চালালে নেই। অনেক ড্রাইভার ট্রাক চালাতে অনীহা প্রকাশ করছে।

বাংলাদেশ ট্রাক কাভার্ড ভ্যান ড্রাইভার্স ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি তালুকদার মোহাম্মদ মনির বলেন, আইনের কারণে অনেক ড্রাইভার ট্রাক সড়কে রেখে চাবি দিয়ে চলে গেছে। মেয়র সাহেব, আপনি আমাদের শ্রমিকদের দিকে একটু খেয়াল রাখবেন।

driver2

ট্রাক মালিক-শ্রমিকদের উদ্দেশে প্যানেল মেয়র জামাল মোস্তফা বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে আমার নিজের কয়েকটি বাস রয়েছে। আমার জীবিকাও ড্রাইভারদের ওপর নির্ভরশীল। তবে নতুন এই সড়ক পরিবহন আইনটিতে ড্রাইভারদের জন্য শিক্ষণীয় অনেক কিছুই রয়েছে। যেমন : সিগন্যাল মানার অভিজ্ঞতা, যত্রতত্র পার্কিং না করা, যানবাহন চালানোর সময় খামখেয়ালিপনা না করা ইত্যাদি।

সভায় তিনি সবাইকে আইন মেনে ট্রাক চালানোর নির্দেশ দেন।

রাজধানীতে বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে গড়ে ওঠা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে মন্ত্রিসভার বৈঠকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয় ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ । নতুন এই আইনে বেপরোয়াভাবে বা অবহেলা করে গাড়ি চালানোর কারণে কেউ আহত বা নিহত হলে দণ্ডবিধির ৩০৪ (খ) ধারায় মামলা দায়ের হবে। আর এই ধারায় সাজা সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড এবং সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা। বর্তমান এই আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ তিন বছর কারাদণ্ডের বিধান আছে। তবে খসড়া আইনানুযায়ী প্রাণহানির ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার কারণ ইচ্ছাকৃত ছিল তদন্তে তা প্রমাণিত হলে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা অনুযায়ী চালকের শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড।

এছাড়াও আগের আইনে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতার কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকলেও নতুন আইনের খসড়ায় ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য চালকের কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণি পাসের শর্ত রাখা হয়েছে। নতুন আইনের খসড়ায় চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকলে অনধিক ছয় মাসের জেল বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড দেয়া হবে।

আগের আইনে এই অপরাধের জন্য তিন মাসের জেল বা ২৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান ছিল।

এআর/এনএফ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।