ঢাবি নিয়ে যে কষ্ট হয় প্রধানমন্ত্রীর

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:১২ পিএম, ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভর্তি হয়েও পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই দুঃখ বরাবর থাকবে জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘দুঃখটা এটাই, বাবাও তার পড়াশোনাটা শেষ করতে পারেননি, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। আর আমার ভাগ্যে জুটেছিল এটা। আমি পঁচাত্তরে তখন জার্মানিতে চলে যাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হিসেবেই।’

তিনি বলেন, ‘মাত্র ১৫ দিন আগে (১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের আগে) আমি দেশ ছেড়েছিলাম। এরপর ছয় বছর আর ফিরে আসতে পারিনি। আমি মাস্টার্সে ভর্তি হয়েছিলাম। কিন্তু তা আর সমাপ্ত করতে পারিনি। আমার সে শিক্ষা অধরাই থেকে গেল। এই দুঃখটা আমার মনে সবসময় আছে, আমার মনে সবসময় থাকবে।’

hasina

শনিবার ঢাবির রোকেয়া হলে নবনির্মিত ‘৭ মার্চ ভবন’ উদ্বোধন করতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। ছাত্রজীবনে এ হলেই থাকতেন শেখ হাসিনা।

আক্ষেপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখন চিন্তা করলাম দেশ স্বাধীন হয়েছে, সবসময় তো আমাদের জীবনে ঝড়ঝাপটা গেছে, তখনই আমার মাকে বলেছিলাম, মা এবারই প্রথম মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করব এবং ভালোভাবে আমি মাস্টার ডিগ্রিটা নেব। কিন্তু সেটা আমার ভাগ্যে জুটল না।’

hasina3

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে সম্মান দিয়েছে, আমাকে অনারারি (সম্মানসূচক) ডিগ্রি দিয়েছে, সেজন্য কৃতজ্ঞ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি। তারপরও নিজে পড়াশোনা করে একটা ডিগ্রি নেয়া…।’

প্রধানমন্ত্রী জানান, তার ভাই শেখ কামাল, মামাত ভাই প্রয়াত শেখ ফজলুল হক মনি, শেখ ফজলুল করিম সেলিমও এই বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়াশোনা করেছেন। তবে তার নিজের ডিগ্রিটা শেষ করতে না পারার দুঃখ রয়ে গেছে।

hasina

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন ও রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা। এর আগে প্রধানমন্ত্রী ৭ মার্চ ভবন ও জাদুঘর পরিদর্শন করেন।

উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান আমলে ১৯৪৯ সালে আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র থাকাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হন। ৬১ বছর পর ২০১০ সালের ১৪ আগস্ট সে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

hasina

অন্যদিকে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি সর্বোচ্চ নেয়ার স্বপ্ন ছিল শেখ হাসিনার। কিন্তু বাবা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। ছয় বছর পর ১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর আর সে সুযোগ ছিল না।

বিএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।