উচ্চ শিক্ষাকে আমরা খরচ মনে করি না, এটা বিনিয়োগ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০২:০২ পিএম, ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৮
ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। উচ্চ শিক্ষা খাতে খরচ আমাদের ব্যয় না, বিনিয়োগ। এটাকে আমরা খরচ মনে করি না, এটা বিনিয়োগ; যেটি দেশ গঠনে কাজ দেবে।

শনিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রোকেয়া হলের ছাত্রীদের জন্য নবনির্মিত আবাসিক ভবন ‘৭ মার্চ ভবন’ উদ্বোধন শেষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। এতে বক্তব্য রাখেন- শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন ও রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা। এর আগে প্রধানমন্ত্রী ৭ মার্চ ভবন ও জাদুঘর পরিদর্শন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের শিক্ষকদের শিক্ষা দেয়া ও শিক্ষার্থীদের শিক্ষা গ্রহণের সময় খেয়াল রাখতে হবে যে শুধু একাডেমিক শিক্ষা গ্রহণ করলে চলবে না। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের নৈতিক শিক্ষার প্রতিও দৃষ্টি দিতে হবে। শিক্ষাকে মানুষের কল্যাণে কাজে লাগাতে হবে।

তিনি বলেন, পৃথিবীর মধ্যে অত্যন্ত কম খরচে আমরা দেশে উচ্চ শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছি। যেটি অন্য কোনো দেশে নেই। আমাদের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করে যে আমাদের ম্যাজিকটা কী? আমরা বলি আমাদের কোনো ম্যাজিক নেই। আমরা একটা আদর্শ নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করি। ক্ষমতা আমাদের ভোগের নয়, জনগণের সেবা। প্রতিটি মুহূর্তে আমরা দেশের মানুষের মঙ্গলের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সেভাবে আমরা শিক্ষাকেও বহুমুখী করার চেষ্টা করছি। সেক্ষেত্রে উচ্চ শিক্ষাকেও বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। প্রাইমারি থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত বিনা বেতন ও বৃত্তির ব্যবস্থা করেছি। আমরা যখন ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসি। তখন দেখি বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতি শিক্ষার্থীদের অনাগ্রহ।

এরপর আমরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি। প্রতিষ্ঠা করেছি ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ও। আমরা চেয়েছি সব জেলাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার। তিনি বলেন, আমরা উপযুক্ত ও দক্ষ কারিগর গড়ে তুলতে উচ্চ শিক্ষার প্রতি জোর দিচ্ছি। শিক্ষাকে বহুমুখী ও বিস্তৃত করার চেষ্টা করছি। যাতে আমাদের শিক্ষার্থীরা এখান থেকে শিক্ষা অর্জনের পর বিভিন্ন দেশে গিয়ে আরো উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। এ লক্ষ্যে আমরা প্রতিটা জেলায় বিশ্বববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা উচ্চ শিক্ষার পাশাপাশি গবেষণা কার্যক্রমের ওপরও জোর দিচ্ছি। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বহুমুখী গবেষণা হচ্ছে। দেশের জনগোষ্ঠী যেন দক্ষ হয় সেজন্য গবেষণা দরকার। আমাদের দক্ষ জনগোষ্ঠী দরকার। সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা শিক্ষাকে বহুমুখী করার চেষ্টা করছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে চাই। তবে শিক্ষিত জাতি ছাড়া তা সম্ভব নয়। তাই আমরা সেখানে গুরুত্ব দিচ্ছি। যেটি জাতির পিতা শুরু করে গেছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়তো আমার ও আমাদের পরিবারের সবার বিশ্ববিদ্যালয়। এখান থেকে সব আন্দোলনের শুরু হয়েছে। এটি সব আন্দোলন সংগ্রামের সূতিকাগার। বাংলাদেশের সব আন্দোলন সংগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সূতিকাগার হিসেবে ভূমিকা রেখেছে।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ড শুধু একটা রাষ্ট্রপ্রধানকে হত্যা না এর মাধ্যমে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে পুনপ্রতিষ্ঠা করা। স্বাধীনতার অর্জন নস্যাৎ করা।

উল্লেখ্য, ১১তলা বিশিষ্ট ৭ মার্চ ভবনটি ছাত্রীদের জন্য অত্যাধুনিক সুবিধা সম্বলিত হলো। যেটি নির্মাণে প্রায় ৮৮ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।

এমএইচ/এনএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।